ক্লাব বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন চেলসি। ফাইনাল খেলায় চেলসি ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিল পিএসজি’কে। ক্লাব ফুটবলে চেলসি যে সবাইকে ছাপিয়ে যেতে পারে, তা ফাইনাল খেলায় দেখিয়ে দিল। চূড়ান্ত পর্বে থেমে গেলো পিএসজির বিজয় রথ। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে চেলসির এই জয়ে রানার্স হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট লুইস এনরিকে ব্রিগেডকে। রবিবার রাতে ম্যাচের শুরু থেকে যথেষ্ট দাপট ছিল চেলসির। তাদের প্লেসিং ফুটবলে কার্যত দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল পিএসজি’র রক্ষণ। ম্যাচ শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যেই গোলের দুরন্ত সুযোগ চলে এসেছিল কুকুরেয়া- জোয়াও পেদ্রোদের সামনে। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় কোল পামারের শট। তখনই এগিয়ে যেতে পারতো চেলসি। ম্যাচের ২২ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন সেই পামারই।
তাঁর গোলেই চেলসি এগিয়ে যায়। এর মিনিট আটক বাদেই এনজো মারেস্কার দলের হয়ে ব্যবধান বাড়ান ২-০ পামার। জোড়া গোলের ধাক্কা সামলানোর আগেই ৪৩ মিনিটে জোয়াও পেদ্রোর গোলে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় তাঁরা। প্রথমার্ধে ৩ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরেই যেন দেওয়াল লিখনটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল পিএসজির জন্য। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা চেষ্টা করলেও কোনওভাবেই আর ঘুরে দাঁড়াতে পারলেন না আশরফ হাকিমি, ওসমান দেম্বেলেরা। এক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্ব দিতে হয় চেলসি গোলরক্ষক রবার্ট স্যানচেজকে। দলের হয়ে অবধারিত বেশকিছু গোল তিনি না বাঁচালে ফলাফল অন্যরকম হতেই পারতো। এদিকে,পুরো ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিলেন তরুণ ইংরেজ ফুটবলার কোল পামার। ম্যাচে জোড়া গোল করার পাশাপাশি জোয়াও পেদ্রোকে দিয়ে একটি গোলও করালেন তিনি। মূলত তাঁর দাপটেই খেতাব ঘরে তুলল চেলসি।
রবিবারের এই ম্যাচ ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ালো দুই দলের ফুটবলারদের মধ্যে। এমনকি বাদ গেলেন না পিএসজি কোচ লুইস এনরিকেও। ম্যাচের শেষদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে চেলসির কুকুরেয়াকে চুল টেনে ফেলা দেওয়ায় লাল কার্ড দেখেন পিএসজি’র মিডফিল্ডার জোয়াও নেভেস। ম্যাচ শেষে চেলসির ব্রাজিলীয় তারকা পেদ্রো পিএসজি’র কোচ এনরিকের সামনে উল্লাস শুরু করলে আর মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। আচমকাই পেদ্রোকে চড় মেরে বসেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মাঠ। দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তাতে জড়িয়ে পড়েন চেলসির কোচ মারেস্কারও। তবে অভিজ্ঞ কোচ এনরিকের এই আচরণ মেনে নিতে পারেননি কেউই। তাই শাস্তির কবলেও পড়তে হতে পারে তাঁকে।ম্যাচ শেষে হঠাৎই পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে উঠে ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর পাশে দাঁড়িয়ে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানা যাচ্ছে, ইনফান্তিনো তাঁকে মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। উল্টে, চেলসি অধিনায়ক রিস জেমস এবং গোলকিপার সানচেজের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে দেন তিনি।
এমনকি, ট্রফি হাতে যখন চেলসি ফুটবলাররা উল্লাসে মত্ত তখন ট্রাম্পও তাতে সামিল হন। তাঁর এই ধরনের আচরণে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সবমিলিয়ে যে এক ঘটনাবহুল ফাইনালের সাক্ষী থাকলেন ফুটবলপ্রেমীরা।