স্টেটসম্যান ওয়েব ডেস্ক: ঘরে জায়গা নেই। বিদ্যুৎ নেই। তাতেও উচ্চশিক্ষায় সফল হন অনেকে। কেউ আবার রেল স্টেশনে পড়াশোনা করেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ দেশে শিক্ষার্থীদের প্রতিকূলতার ছবিটা এই রকমই। কিন্তু তা বলে জেলে বসে উচ্চ শিক্ষা! সম্প্রতি সেই রকমই ইতিহাস গড়ল হুগলি সংশোধনাগারের বন্দি অর্ণব দাম। রাজ্য কারা দফতর সূত্রে খবর, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন অর্ণব। জেলে বসেই দিয়েছিলেন স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট। তাতে উত্তীর্ণ হয়ে বুধবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে ইন্টারভিউ দিলেন তিনি। কারাগারে বসে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের মতো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও এই ধরণের উচ্চ পর্যায়ের পরীক্ষায় কেউ উত্তীর্ণ হননি বলেই জানাচ্ছে রাজ্য কারা দফতর।
অর্ণবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। ছোট ছেলে অর্ণব একটা সময় খড়গপুর আইআইটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করত। তবে কিছুদিন পড়ার পরেই মাঝ পথে থামিয়ে দেন পড়াশোনা। তারপর যোগ দিয়েছিলেন মাওবাদী সংগঠনে। সূত্রের খবর, মাওবাদী পলিটব্যুরো নেতা কিষেনজির অত্যন্ত কাছের পাত্র ছিলেন অর্ণব। দীর্ঘদিন মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার পর ২০১২ সালে ধরা পড়েন পুলিশের হাতে।
Advertisement
তবে জেলবন্দি হয়েও ইচ্ছে শক্তি দমে যায়নি তাঁর। জেলে বসেই শুরু করেন পড়াশোনার প্রস্তুতি। জেল থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট পাশ করার জন্য শুরু করেন পড়াশোনা। অবশেষে সেখানেও আসে সাফল্য। এ বিষয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান সৈয়দ তানভির নাসরিন বলেন, ‘উনি খবরের কাগজ দেখে আবেদন করেন। আমাদের কাছে যতগুলি আবেদন জমা পড়েছিল, তার মধ্যে অনেকেই সবথেকে বেশি যোগ্য মনে হয়েছে।’
Advertisement
Advertisement



