দু-কোটি অর্থের খোঁজে এবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সিআইডি তদন্ত, শুরু হলো জিজ্ঞাসাবাদ

Written by SNS April 8, 2024 2:14 pm

আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ৭ এপ্রিল– বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দু কোটি টাকা স্থায়ী আমানত গায়েব হবার পর এবার সিআইডি তদন্ত শুরু হলো৷ আর্থিক বছরের শুরুতে প্রকাশ্যে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা বেআইনিভাবে অন্যের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে গেছে৷ এ নিয়ে রাতারাতি হইচই শুরু হয়৷ প্রাথমিকভাবে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী ও ফিনান্স অফিসার এর সই জাল করে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে৷ এর পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নডে়চডে় বসে৷ আসতে থাকে জডি়ত থাকি একাধিক কর্মীর নাম৷ এমনকি এ বিষয়ে যে একটা পুরো চক্র দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ করেছে সেটা অনেকের কাছে পরিস্কার হয়ে যায়৷ এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেপ্তার করার পর সিআইডি তদন্তে নামার পর নতুন করে জল্পনা দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে৷

একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত গচ্ছিত ছিল৷ আর সেখান থেকেই কয়েক দফায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে যায়৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর কাছে যখন খবর পৌঁছায় তখন দেখা যায় এক ব্যাক্তির অ্যাকাউন্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীর মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার হয়ে গেছে৷ এর পর কর্তৃপক্ষ একের পর এক তদন্ত কমিটি গডে় কেলেঙ্কারি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ৷ কর্মী সংগঠন থেকে শুরু করে সব মহলের পক্ষ থেকেই প্রকৃত অপরাধীদের সামনে আনার দাবি জোরালো হতে থাকে৷ এরই মধ্যে স্থায়ী আমানতের কাগজপত্র কি ভাবে গোপন লকার হয়ে অভিযুক্তদের কাছে গেল, এ সব প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই৷ ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ আর তার পরেই নানা বিতর্কের মাঝেই সিআইডি আর্থিক কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত দুটি মামলা হাতে নেয়৷ আর তদন্তভার নিয়েই সিআইডি মূল অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ভক্ত মন্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে৷ একই সঙ্গে যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয় সেই কলকাতার বাসিন্দা সুব্রত দাসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ব্যাঙ্কের তরফে একটি মামলা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অন্য একটি মামলার বিষয় খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে৷ দুটি পৃথক মামলায় শুধুমাত্র সন্দেহভাজনরাই নন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যদেরও সিআইডির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভবনা আছে৷ অন্যদিকে আদালতে মামলা উঠলে বর্ধমান জেলা জজ সুজয় সেনগুপ্ত সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন কি ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেফাজতে থাকা স্থায়ী আমানতের শংসাপত্র অন্যের হাত হয়ে টাকা তোলা হয়ে গেল৷ এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদাধিকারীরা যে সন্দেহের উর্দ্ধে নন বলে বিচারক মন্তব্য করেন৷ আর সিআইডি তদন্তে নামার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী মহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে৷