কাকলির হাত ধরে দেগঙ্গায় বিজেপি, বাম ও আইএসএফের প্রায় ১০০০ জন কর্মীসমর্থকের তৃণমূলে যোগদান

Written by SNS April 28, 2024 3:27 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি— বারাসাত কেন্দ্রে নির্বাচন সপ্তম অর্থাৎ সর্বশেষ দফায়৷ তাই বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রের চতুর্থবারের তৃণমূল কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের হাত ধরে সেই প্রস্তুতিও চলছে জোরকদমে৷ দিল্লি দখলের লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে ভোটযুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন কাকলি৷ সেই উদ্দেশ্যেই শুক্রের সন্ধ্যেয় দেগঙ্গায় আয়োজিত হয় এক কর্মীসভা৷ দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি আনিসুর রহমান ছিলেন এই কর্মীসভার পরিচালক৷ সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ এদিনের কর্মীসভায় বিজেপি, সিপিএম, আইএসএফের বহু নেতা, কর্মীরা স্বেচ্ছায় নিজ দল ত্যাগ করে কাকলি ঘোষ দস্তিদারের হাত ধরে দলীয় পতাকা উড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন৷ সবমিলিয়ে প্রায় হাজার জন এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে জনস্বার্থে কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন৷ উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচন, বিধানসভা নির্বাচন এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলকে টক্কর দিয়েছিল গেরুয়া শিবির৷ কিন্ত্ত চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন শুরু হতে না হতেই সেই চিত্রের আমূল বদল ঘটে৷ বিজেপি সহ বিভিন্ন দল থেকে কর্মীসমর্থকেরা তৃণমূলে যোগদান করেন কাকলির হাত ধরে৷ তাঁরা উপলব্ধি করেন, বাস্তব উন্নয়ন সম্ভব তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরেই৷ তাই এই উপলব্ধি থেকেই শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত হিসেবে দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করেন তাঁরা৷

সেই সভামঞ্চ থেকেই স্মৃতিচারণা করে কাকলি আক্রমণ শানান বামেদের৷ বাম আমলের বারাসাত শহর ও বারাসাত জেলা হাসপাতালকে ‘ভূতের বাড়ি’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি৷ পাশাপাশি বর্তমানের আলোকসজ্জিত বারাসাতের সাথে পুরাতন বারাসাতের তুলনা করেন৷ তাঁর ভাষায়, বারাসাত জেলা হাসপাতালে বাম আমলে কুকুর ঘুরে বেড়াতো কিন্ত্ত বর্তমানে সেটি বারাসাত মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে, হাসপাতালে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া৷ কোনো অসুস্থ মানুষই ওই হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যান না, এমনই দাবি করেন কাকলি৷ বিশ্বনাথপুরেও কাকলির উদ্যোগে পুনর্নিমিত হচ্ছে একটি হাসপাতাল, সেখানে বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি থেকে কি কি আধুনিক ব্যবস্থা রাখা হবে সেই খতিয়ানও এদিনের সভা থেকে তুলে ধরেন কাকলি৷ এর সাথে কাকলির নিজের করা উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান গুলিও তুলে ধরেন কর্মীসভার মঞ্চ থেকে৷

এদিনের সভামঞ্চ থেকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি গেরুয়া শিবিরকেও৷ সিএএ এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে দেগঙ্গার মঞ্চ থেকেই তিনি আওয়াজ তুলেছেন৷ প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পের, যেখানে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষকে রাখা হয়েছিল৷ আবাস ও একশো দিনের কাজের টাকা না দেওয়া নিয়েও কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন কাকলি৷” সিআরপিএফ নির্বাচনের সময় বিজেপির হয়ে কাজ করতে আসে, শীতলকুচিতেও এরা তাই করেছিল৷ তাই বুক চিতিয়ে লড়াই করবেন”, এভাবেই দঢ় কণ্ঠে সাধারণ মানুষকে সাহস জুগিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি৷ কেবল কেন্দ্রের জনবিরোধী আইন বা সিএএ’র বিরুদ্ধে সরব হওয়া নয়, পাশাপাশি সভাস্থল থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন কাকলি৷ তাঁর ভাষায়, “আমায় বিপুল ভোটে জয়ী করুন, তারপর সাংসদ করে দিল্লিতে পাঠান৷ আমি বাংলার প্রাপ্য টাকার জন্য লড়াই করে কেন্দ্র থেকে মানুষের টাকা নিয়ে আসবো৷ যেটি ব্যবহৃত হবে বাংলার উন্নয়নকার্যে৷” এদিনের সভাস্থল পরিপূর্ণ ছিল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের ভিড়ে৷ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মফিজুল হক সাহাজী, দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি আনিসুর রহমান (বিদেশ )৷