একদিনের সংলাপ
শ্যামাশ্রী মুখোপাধ্যায়
যে কথারা শুরু হয়েছিল কখনও
স্লিপিং পিলের মতো নিঃশব্দে মিশে যায় গভীরে
Advertisement
আজ সারাদিন কথা হল না তোমার সাথে
হয়তো হবেও না আর কখনও…
Advertisement
একটা সুতীব্র শূন্যতা অনুভব করছি…
মাত্র একদিনের সংলাপে এতটা ঘোর!
কীভাবে কাটাবো এ ঘোর!
বিনিসুতোর মতো একদিন কেটে যাবে এ টান—
যে টানের একমাত্র জাদুকর ছিলে তুমি!
রহস্যের ভেতর রহস্য ভেদ করে
যে মায়াজাল তৈরি হয়েছিল কখনও
তার উত্তর আমাদের জানা হবে না…
জং ধরা বালতি
প্রাণজি বসাক
জং ধরা বালতির মতো অপেক্ষায় থাকি
কুয়োতে ওঠানামা করতে করতে তলপেটে ফুটো ধরেছে
জল তোলার ক্ষমতা কমে গেছে কবে থেকে
দু’চার বার লাথ খেয়ে পড়েছি দূরে নোংরা নালায়
দাম কমে গেছে বাড়ির বৃদ্ধ কর্তার মতন
আমাকে ধরে রেখেছে যেন সময়ের স্রোতে মোক্ষম সাক্ষী
কলতলা কুয়োতলা শব্দরা কোথায় যে লুকলো
কুলকুচি করতে বসে বড়কর্তা শাসিয়ে গেল অন্য ভাষায়
দালালরা ঘুচঘুচ করছে টোপ দিচ্ছে কখনও শাসাচ্ছে
কতরকম ঝাঁ চকচকে অফার পরামর্শ
প্রজাপতির মতো ওড়াউড়ি করে
তুলসিবাগানে ঘোরে ফেরে
অপেক্ষায় আছি— জং ধরা বালতির মতো
তবু, অস্পষ্ট
মৃণালেন্দু দাশ
অকুস্থল থেকে দূরে ঝুলছে ব্রা, প্যান্টি, রক্ত, কান্না
এত ঘৃণ্যস্পর্শে দুঃসময়! যন্ত্রণার, অপমানের, কষ্টের
লজ্জা। নারীত্বের। মনুষত্বের। অসহ্য!
মুখে কুলুপ। সূঁচ ফুটছে জিভে, কন্ঠে, চোখে— স্থির চরাচর
লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে সন্ধ্যা, কৃষ্টি, সৃষ্টি, শরীর, সম্ভ্রম, মন
বিশ্বাস, বন্ধুত্ব এবং আরো, আরো অনেককিছুই
পিশাচ নাচছে টুঁটি চেপে, মূক ও স্থবির পারিষদবর্গ
মঞ্চ জুড়ে তীব্র র্সাচলাইট ঝাঁ ঝাঁ, তবু, অস্পষ্ট কুশীলব
বৃষ্টি বৃষ্টি গল্পগাছি
মধুছন্দা মিত্র ঘোষ
জলহাওয়ার ইস্তাহারে যে সকল মেঘ-কুয়াশা
আকাশময় ঘুরছিল
আহ্লাদে আটখানায় তারা
ঝরে ঝরে পড়ছে
ছায়ার কাছে
মায়ার কাছে
রিমঝিম আড়ম্বরে
এপার-ওপার
আষাঢ়-শ্রাবণ থই থই
আকাশ গেয়ে উঠলো
বাতাস গেয়ে উঠলো
আনন্দ গান
আদরের গান
হঠাৎ কখন শিল্প হয়ে উঠল
প্ররোচিত রাতের
বৃষ্টিবিহ্বলতা…
খোঁজ
সোমা মুখোপাধ্যায়
আসলে কেউ ভালো নেই,
ভালোর মত লাগে।
বাঁধের জল ভাঙলেই,
জলপ্রপাত জাগে।
নুড়ি পাথর জড়ো হয়ে,
জাগে নতুন আধার
ভাগাভাগি বাটোয়ারার
চূড়ান্ত সারাৎসার।
জিয়নকাঠি স্বপ্নপুরাণ
মনখারাপের শ্লথ।
বেবাক জীবন দৃশ্যপথে
অন্বেষণের রথ।
সময়
️সুচন্দ্রিতা ঘোষাল চক্রবর্তী
জীবনের বিয়োগ ব্যথা
তারা হয়ে ফুটে ওঠে রোজ।
মৃত্যু দিয়েছে ভয়
দিয়েছে অখণ্ড সাহসও!
সময়ের আগুনে তপ্ত জীবন।
তবুও–
সুস্থ হও, স্নিগ্ধ হও মরমীয়া বাতাসের মতো।
নক্ষত্র হও রাতের আকাশে।
Advertisement



