অনিন্দিতা মণ্ডল
১
এক একটা দিন মন অকারণে ভালো হয়। আবার কোনো কোনো দিন ঘুম থেকে উঠে সেই যে মন ভার হয় তার কোনো কারণই খুঁজে পাই না। নিজের মধ্যে পাতাল স্পর্শ করতে ইচ্ছে যায়। মনের গহনে ডুব দিয়ে তুলে আনতে ইচ্ছে করে বিষের পাথর। কিন্তু ডুব দিতে পারি কই!
Advertisement
আজ অবশ্য দিনটা ভালো। নবারুণ বলেছে, মন আর দিন একসঙ্গে ভালো থাকাটা অনেকটা লটারির মতন। যেদিন মন ভালো থাকে সেদিন দিনটা যে ভালো যাবেই এমন কথা নেই। কিন্তু আজ সেই মাহেন্দ্র যোগ। মন ও দিন ভালো।
Advertisement
ফোনের নীল আলো জ্বলে আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিল। এখন কোনো তাড়া নেই। ঘুম ভাঙলেই যে ছুটে বেড়াতে হবে এমন কথাই নেই।
বিছানা ছেড়ে জানলার পাশে এলাম। মাটি থেকে একটা লতা উঠে জানলা জড়িয়ে ধরেছে। খুব ধীরে লতাটার গায়ে হাত দিলাম। ভেজা পাতার শিরশিরে অনুভূতি হাতে চারিয়ে গেল। বেশ ঘন সবুজ পাতাগুলো। জংলি লতাই হবে। আগে হলে ওকে আমি ছিঁড়ে খুঁড়ে শেষ করে দিতাম।
বাইরে তাকাতেই চোখে পড়ল, লতাটা একা নেই। ওর চারপাশে শ্রাবণের জলে যথেষ্ট আগাছা বেড়ে উঠেছে। পেয়ারাতলায় যাওয়াই সম্ভব নয়। আমি কি মধুদাকে ডাকব? বাগান পরিষ্কার করে দেবে?
চায়ে চুমুক দিতে দিতে মনে পড়ল এই সকালে আমেদপুরের বাড়িতে আমরা খুব পেয়ারা পাড়তাম। ভাইবোনে মিলে জলে ভিজে যেমন খুশি খেলতাম। বড়রা বারণ করত না। কিন্তু কিছু পরেই ডাকাডাকি করে দালানে তুলে নিত। আমরা হাত পা ধুয়ে জামাকাপড় ছেড়ে গরম চায়ে চুমুক দিতাম। সেই চুমুকের সঙ্গে আজকের চায়ে চুমুক মিলে কোথাও একটা সূত্র তৈরি হচ্ছে। সেই পেয়ারাতলা সেই শ্রাবণের ঝিম ধরানো অন্ধকার মিলে একটা অন্যরকম দিন শুরু হতে যাচ্ছে।
চট করে দরজা খুলে বাইরে এলাম। বৃষ্টির কোনো ছাঁট নেই। সোজা ঝরঝর করে পড়ছে, পড়েই চলেছে। দরজা পেরিয়ে ছোট্ট চাতাল ছেড়ে যখন মাটিতে নামলাম, মনে হল দিনটা এমন করে আমাকে ছোঁওয়ার অপেক্ষায় ছিল। লম্বা লম্বা ঘাস হয়েছে। মাঝে লেবু গাছটা বড় বড় পাতা ছড়িয়েছে। লেবু আছে পাতার আড়ালে। দক্ষিণ কোণে বকুল গাছটা খুশিতে ঝকমক করছে। ওর গায়ে জুঁই। পেয়ারাতলায় গিয়ে দেখি গাছের ডালে বারবেট পাখির জোড়া দুটো বাচ্চাগুলোকে নিয়ে ব্যস্ত। মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। ওরা দুটো পেয়ারা বেছে নিয়েছে। সেগুলোই ঠুকরে খাচ্ছে। কখনও পাতা থেকে পোকামাকড় তুলছে। চারটে বাচ্চা নিয়ে জমজমাট সংসার। ওদের ভিজলেও কিচ্ছু এসে যাচ্ছে না। পাশের দুটো ডাল পরে একটা বড় পেয়ারা কাঠবেড়ালির দখলে। ও কি আমাকে চেনে? এর আগেও ওকে দেখেছি। কিন্তু আজকের মতন স্পষ্ট করে দেখিনি। লেজ তুলে ও দৌড়ে দৌড়ে ডালে ডালে ঘুরছে। কিন্তু পাখি পরিবারকে একটুও বিরক্ত করছে না। মাঝে মাঝে আমার দিকে হাঁ করে দেখছে। ও কি খুব অবাক হয়েছে আমাকে দেখে? খুব ভালো লাগছে আমার। একটা পেয়ারাগাছ বড় হলে কতজনের আশ্রয় হয়!
হঠাত মনে হল কে যেন ডাকছে আমায়। মধুদা হয়ত। হ্যাঁ, পেয়ারাতলায় অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে আছি। ভিজে ঢোল হয়ে গেছি। ইশ, আমার যদি পাখির মতন পালক থাকত!
ঘরে না ঢুকে বাথরুমে গেলাম। বেশ করে স্নান সেরে ঝরঝরে হয়ে নিলাম। তারপর খোলা জানলার সামনে জলখাবার নিয়ে বসলাম। আমি জানি সকলের কৌতূহল হচ্ছে। কী জলখাবার। এটা স্বাভাবিক। নবারুণ বলেছিল, জলখাবার সাদাসিধে না জমকালো এতে কিচ্ছু যায় আসে না। আসল হল তারিয়ে তারিয়ে খাওয়া।
আমি তারিয়ে তারিয়ে চিঁড়ে ভাজা আর দুটো কলা খাচ্ছি। সুইগি বা জোমাটো করে পিজ্জা বা বার্গার অনেক খেয়েছি। জিভে মোটা সর পড়ে গেছে। এখনও ইচ্ছে হলে খেতে পারি। কিন্তু নবারুণ বলেছে, দেখবি ইচ্ছেটাই আর করবে না। খেতে খেতে বৃষ্টি দেখছি। হঠাত কেমন মনের মধ্যে গুলিয়ে উঠল। আচ্ছা, ওই সুইগির প্রতাপ বলে ছেলেটি? ও কেমন আছে? ও আছে তো? প্রতাপ বাচ্চা ছেলে। একটা বাইকে করে ঝড়ের গতিতে খাবার ডেলিভারি করত। প্রায় রোজ ওই আসত খাবার নিয়ে। এটা নাকি ওর জোন। আলিবাবা থেকে বাংলার হেঁসেল, সব। আলিবাবার মোগলাই খানার কথা বলা বাহুল্য আপনারা জানেন। বাংলার হেঁসেল অবিশ্যি নতুন। শহরের নতুন অফিস তল্লাটের গা ঘেঁষে কয়েকজন গিন্নি এটা চালু করেছেন।
ফোনটা টেনে নিলাম। প্রতাপের শেষ মেসেজ এপ্রিলের শুরুতে। তারপর আর নেই। এপ্রিল ঝকঝকে দিন। অথচ আমার মন ভালো ছিল না। তারপর আর একটাও মেসেজ নেই। একটা মেসেজ করলাম। মেসেজটা ওর কাছে গেল না। কী মনে হল, নম্বরটায় কল করলাম। দিস নাম্বার ডাজন’ট এক্সিস্ট। তলিয়ে যাচ্ছি। কী হল প্রতাপের! তাড়াতাড়ি সুইগির অ্যাপ খুললাম। বাংলার হেঁসেলে অর্ডার দিয়ে দেখব। একটা ফিস থালি সিলেক্ট করে অর্ডার দিলাম। একটু পরে সুইগি জানালো আমার লোকেশানে ডেলিভারি সম্ভব নয়। তাই তো! এইখানে সুইগি পৌঁছবে কী করে! নবারুণ কী বিশ্রি করে হাসল!
চিঁড়ে ভাজা নেতিয়ে গেছে। আমি বাটি থেকে বাকিটা জানলা গলিয়ে ফেলে দিলাম। পোকায় খাক।
বাগানে ব্যাঙ ডাকে সন্ধের পর। হঠাত আমি এমন প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে উঠছি কেন? নিজেরই অবাক লাগছে। নবারুণ বলেছিল, নিজের সঙ্গে কেউ থাকতে পারে না। প্রকৃতির সঙ্গে পারে। অবশ্য ও প্রকৃতি বলতে শুধুই নেচার বলেনি। গাছ ফুল পশু পাখি ছাড়াও প্রকৃতি বলতে ও নারী বোঝাতো।
দিন গড়িয়ে যাচ্ছে দেখে দুটো সেদ্ধ ভাত বসিয়ে দিলাম। খিচুড়ি আমার একদম ভালো লাগে না। এই বর্ষায় সবজিও তেমন নেই। একটা রাঙালু আর একটা পটল ভাতে ফেলে দিলাম। গরম গরম ফেনা ভাতে নুন তেল দিয়ে খাওয়া হয়ে যাবে।
এমন করে নিজে করে খাওয়ায় একটা পজিটিভ ভাব আসে। ইউটিউবে দেখেছি। হ্যাপি হরমোন সিক্রিয়েট করে। ভাত বসিয়ে ঘর গুছোতে শুরু করলাম। এই তো ছিরির ঘর! বাইরে অতঃপর। বুকের মধ্যে দারুণ বৃষ্টি ঝরছে হঠাত। ভাতের গন্ধ ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে।
বেশ শুদ্ধ লাগছে নিজেকে। এত জলে শুদ্ধ লাগে আমার। গরম ভাত মুখে তুলতেই নবারুণের কথা মনে পড়ল। এমন শয়তান, বলেছিল, ওই শুকনো মুরগির ঠ্যাং দিয়ে চারটি করকরে হলদে ভাত খেতে খারাপ লাগে না? কাঁচা পেঁয়াজের পচা গন্ধে টেঁকা দায়। এখন আমি টাটকা লঙ্কা টিপে ভাত খাচ্ছি। কতদিন রাঙালু সেদ্দ খাইনি। খুব ভালো লাগছে। বাইরে চোখ পড়তেই দেখি কাঠবেড়ালিটা একদৃষ্টে আমাকে দেখছে। মায়া হল। জানলার কাঁতিতে একদলা ভাত রেখে দিলাম। যদি খায়, খেতে পারে।
শুধু বাগান ঘর আর খাওয়া নিয়েই দিন পার হয়ে গেল। কী আশ্চর্য! চারটে মাস আমি এমন নির্জন বাসে আছি! অথচ আমাকে ঘিরে কত লোক থাকত একসময়! আমার কি দুঃখ হচ্ছে? মন খারাপ? ঠিক তা নয়। তবে একটা লোক যদি থাকত ভালো হত। কেউ কোথাও নেই। নবারুণের হাসি মনে পড়ল, মেয়ে চাই?
চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম। ঘর অন্ধকার। দালানে আলো জ্বলছে। সেই আধো অন্ধকারে নিরবিচ্ছিন্ন বৃষ্টির মধ্যে মনে হল মায়া এসেছে। অনেকদিন পর! মায়া? মায়া এতদিন কোথায় ছিল? আমি কি ওকে চিনতাম? জিজ্ঞাসু চোখে চাইলাম। মায়া আমার দৃষ্টি পড়তে পারল। মুচকি হেসে একরাশ চুল ঢেলে দিলো আমার মুখে আর বুকে। আমি ওকে জাপটে ধরলাম। কানের কাছে ফিসফিস করে বললাম, এতদিন আসোনি কেন, মায়া? মায়ার শরীরের ছোঁয়া আমার সব মন খারাপ সরিয়ে দিচ্ছে। মায়া কথা বলছে না। শুধু হাসির আওয়াজ জলতরঙ্গের মতন আমার শরীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। ভারি ভালো লাগছে। আমি বলছি, মায়া, বাগানে বারবেট পাখির ছানা হয়েছে। দেখো আমার ঘরে শিশু নেই। কাঠবেড়ালিটা পর্যন্ত অবাক হয়। আমি ওদের জন্য পেয়ারা তুলি না। পেয়ারা খেয়ে ওরা বেঁচে থাক। সব কি আমি নেব? আমরা নিয়ে নেব? মায়া উত্তর দেয় না। হাসে। আমি মায়ার শরীরে মিশে যেতে থাকি।
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। ভোরে ফোনের নীল আলো জাগিয়ে দিলো। বৃষ্টি থামার কোনো লক্ষণ নেই। ফোনে তাকিয়ে দেখি, বাংলার হেঁসেল থেকে মেসেজ এসেছে। সোজা বাংলায় লিখেছে, আপনি কোথায়? লোকেশান শো করছে না কেন? আমাদের এখন অত ভ্যারাইটি নেই। একটু দাম কমিয়ে দিতে হচ্ছে। তাছাড়া সুইগিতে আমরা আর নেই। তবু আপনি চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন। অনেকদিনের পরিচয়। আমরা এখন পুরনো সকলকে পার্সোনালি মেসেজ করছি।
নবারুণ হাসছে। কথা বল হতভাগা! কথা বল! এক রাতে মায়ায় জড়ালি?
বাইরে কাঠবেড়ালিটা কি আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে?
২
বছর শুরু হতেই শোনা গিয়েছিল কর্পোরেট ব্যপক হারে ছাঁটাই করতে চলেছে। এখানে ওসব ইউনিয়নের ট্যাঁ ফো নেই। ছাঁটাই মিন্স ছাঁটাই। দু একমাসের নোটিশ। ব্যাস। নবারুণের মনে পড়ছে, কী আতংক বুকে চেপে বসেছিল! বর্ষাও বিনা নোটিশে ব্রেক আপ করল। বলেছিল, আমার সরকারি স্কুল টিচারের মাইনেতে দু’জনের সংসার চলবে না। ভয় নেই। আমি আর কারোর সঙ্গেই রিলেশানে যাচ্ছি না। অকারণ সন্দেহ কোরো না। নবারুণের মুখে এসে গিয়েছিল, তুমি কি আমার চাকরির সঙ্গে রিলেশানে ছিলে? কিন্তু এতদিনের প্রেমিকাকে কঠিন কথাটা বলতে পারেনি। সত্যিই তো! নবারুণ কি বর্ষার ঘাড়ে বসে খাবে?
শহর ছেড়ে আমেদপুরে আসা ছাড়া উপায় ছিল না। ব্যাঙ্কে কিছু জমা ছিল। ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ফ্ল্যাটের লোন করবে ভেবেছিল। সেই টাকাই এখন আশ্রয়। আমেদপুরে এসে নবারুণ ধাক্কা খেল। এ কী অবস্থা! ভিটেতে সত্যিই ঘুঘু চরছে যে! বাবা-মা তো কবেই চলে গেছে। তুতো ভাইবোনেদের সঙ্গে একটুও যোগাযোগ নেই। একা একা দরজা ঠেলে ঘরে ঢোকা। করুণ অবস্থা।
দরজা খোলা দেখে মধুদা এসেছে। বাইক দেখে খুব খুশি। কেমন করে চিনেছে কে জানে! বুড়ো মধু মালি ওর নিজের ঘরটা বেশ যত্নে রেখেছে। নবারুণ বলেছিল, মধুদা আমি তোমাকে কিচ্ছু দিতে পারব না। মধু হেসেছিল, এতদিন কে দেখেছে আমারে? তোমার দাদারা তো পালিয়েছে। ওসব ভাবতে হবেনি। তুমি থাকো দেখি।
কোনোভাবে ইলেকট্রিক এনে ঘরদোর সেরেছে নবারুণ। তারপর থেকে একা একা বেশ কাটছে। মধু চারমাথার মোড়ে এক ডালা পান নিয়ে বসে। বাগানে পান করে আর চুন খয়ের সুপুরি দিয়ে খিলি করে। এক ডালা পান বেচে ওর দিব্যি চলে যায়। সন্ধের পর ওর হাঁটু টাটায়। উঃ আঃ করতে করতে একটু আগুন জ্বেলে সেঁক তাপ করে। নবারুণ একটা তার টেনে ওর ঘরে আলো করে দিয়েছে। পাখার হাওয়া ও মোটে সইতে পারে না।
মায়ার সঙ্গে রাতটা কাটার পর নবারুণ জলে ভরা উঠোনে পায়ের পাতা ডুবিয়ে মধুর ঘরে গেল। মধু ঘুম থেকে উঠে ওর ন্যাকড়াকানি পাট করছিল। নবারুণকে দেখে হাসল। যাক, কোটর ছেড়ে বেরুলে তালে। পাখির খাবার শেষ হলে সে খাবার জোগাড় করতে যায়। তুমি বা যাবে না কেন?
৩
নবারুণ এখন আমার সঙ্গেই থাকে। মানে আমি আর নবারুণ। না না, মানে আমিই নবারুণ। মায়া মাঝে-সাঝে আসে। খারাপ লাগে না। বর্ষা কাটলে আমি উঠে দাঁড়ালাম। আমেদপুর থেকে বাইক নিয়ে বাংলার হেঁসেলে যেতে আধ ঘণ্টা লাগে। গাঁ বলে লোকেশান ট্র্যাক করা যায় না। কেন যে এখানেই থাকিনি!
বাংলার হেঁসেলের বাড়িটার কাছে বাইক থামিয়ে ফোন করলাম। মধ্যতিরিশের একটি মেয়ে বেরিয়ে এলো। বলল, আপনিই নবারুণ? আসুন ভেতরে আসুন। আমি মায়া।
খুব অদ্ভুত লাগছে। একে আমি কখনও দেখিনি। স্বপ্নে দেখেছি নাকি! মায়া আমায় বুঝিয়ে দিলো। তাদের এখন কোথাও তেমন ডেলিভারির অর্ডার আসে না। কাছে একটি বৃদ্ধাশ্রম আছে। আর আছে একটি চটের জিনিস তৈরির কারখানা। এরা অর্ডার দেয়। আর কয়েকটা পুরনো ক্লায়েন্ট অর্ডার দেয়। নবারুণ ডেলিভারি করতে পারেন। খাবার আপাতত ফ্রি। পরে উন্নতি হলে কিছু টাকা পাওয়া যেতে পারে। হ্যাঁ, বাইকের তেলও ফ্রি।
আমি নবারুণের দিকে চাইলাম। ও চোখ টিপল। সবই মায়া। জড়িয়ে নে।
মধুদা খুব খুশি। বহুদিন পর মৌরলা মাছের ঝাল চচ্চড়ি খাচ্ছে।
আমি মনের ভেতরে ডুব দিলাম। সেখানে বিষ পাথরটা নিথর বসে আছে। একদম তলিয়ে। কখনও ওর গায়ে পুরনো কোম্পানির লোগো, কখনও বা বর্ষার মুখ ফুটে উঠতে দেখছি। মনে মনে নিশ্চিন্ত আমি। ও আর ভেসে উঠবে না। বাগানের পেয়ারাতলায় আবার শ্রাবণ আসবে। আপাদমস্তক ভিজে আমি আর মধুদা এমন করেই কাটিয়ে দেব। বুড়ো কাঠবেড়ালি আর বারবেট দম্পতি আমাদের সঙ্গে থাকবে। জানলা জড়িয়ে জংলি লতাটাও থাকবে।
Advertisement



