• facebook
  • twitter
Thursday, 13 February, 2025

কবিতা গুচ্ছ

নিমপাতা আর মাছের ডিমে তৈরি করে বড়া, চায়ের সঙ্গে খেতে হবে লিকার হবে কড়া। লঙ্কা গুঁড়ো মাখতে হবে গায়ে ভালো করে, রোদের বেলা হাঁটতে হবে ঘন্টা ছয়েক ধরে।

প্রতীকী চিত্র

বইমেলাতে যাবে টুকাই
সুচিত চক্রবর্তী

বইমেলাতে যাবে টুকাই
বলল, শোনো বাবা—
গল্পের বই কিনবো এবার
চাই না আমার দাবা।
স্কুলের আমার বন্ধুরাও
বইমেলাতে যাবে,
দাদাই বলল, ব্রেকফাস্টটা
কখন তুমি খাবে?
দিদুন বলল, খুশি হলাম
বই পড়ার ঝোঁক দেখে,
কী কী বই তোর কেনার ইচ্ছে
বল না একে একে।
টুকাই বলল, রহস্য ও
ভূতের বইও নেব,
দিদুন বলল, ভাবিস না আর
বলছি কিনে দেব।
মাথা থেকে বইমেলার ঐ
চিন্তা ফেলে দিয়ে
তাড়াতাড়ি পড়তে বোস
পড়ার ঘরে গিয়ে।

 

এমন মিষ্টি দিন
শঙ্করকুমার চক্রবর্তী

বলতে বলতে বৃষ্টি এলো
লাল মুনিয়ার স্নান,
ভিজতে ভিজতে শুনছে ওরা
রবি ঠাকুরের গান।

গান বাজছে রেডিওতে
বৃষ্টি ঝুমুর ঝুম,
মেঘ ডাকছে গুড়ুম-গুড়ুম
বর্ষার মরশুম।

পদ্মকুঁড়ি ফুটবে এবার
পদ্মপাতার বুকে,
ভিজতে ভিজতে ফড়িং এলো
বসলো পাতায় ঝুঁকে।

এমন দিনে হাওয়ার কানে
কে বাজালো বাঁশি,
বাগান জুড়ে ফুলের মুখে
ঝর্ণার মতো হাসি!

 

পুজো পাঁচালি
শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ

দুর্গা এলো মন্ডপেতে সঙ্গে ছেলে মেয়ে
পাড়ার সবাই জুটলো এসে দেখলো চেয়ে চেয়ে।
দুর্গা আছে ত্রিশূল ধরে অসুর নীচে বসে
অনেক দোষে পড়েছে সে দুর্গা মায়ের রোষে।

হাঁস ময়ূর ইঁদুর পেঁচা মন্ডপেতেই আছে
লক্ষ্মী সরো কাতু গনু এদের কাছে আছে।
দুগ্গা মায়ের কপালেতে চক্ষু আছে আঁকা,
কলা বউয়ের বাঁকানো মুখ ঘোমটা দিয়ে ঢাকা।

‘শ্রী দুর্গা ঐ নমঃ’ বলে মন্ত্র পড়ে ঠাকুর,
ঢাকের কাঠি বোল তুলেছে তাক্কু তাকুর নাকুর।
একটু পরে বলল পুরুত: সামনে এসে দাঁড়াও
অঞ্জলি-ফুল দেবো হাতে হাত দুটোকে বাড়াও।

এমনি করে চলতে চলতে হঠাৎ পুজো শেষ,
পাড়ার সবার দু-চোখ থেকে খুশি নিরুদ্দেশ।

 

একটা গল্প বলি
রুচিরা মুখোপাধ্যায় দাস

শোনো একটা গল্প বলি
এক যে রাজা এক যে রানি
মন্ত্রী-তন্ত্রী সেনাপতি
পুরনো সব কথাকলি।

রূপকথাদের কথার ভিড়ে
লালকমল আর নীলকমলে
অনেক তো ভাই এলেম ঘুরে
সঙ্গে নিয়ে ব্যাঙ্গমিরে।

আজ বলবো তাদের কথা,
যাদের জন্যই প্রাণে বাঁচা
বিশ্ব জুড়ে দূষণ রোখা
যাদের শুধুই নীরবতা।

যার জন্য কাঁদলে আকাশ
তেষ্টা মেটায় ঝমঝমাঝম্
তার জন্যই নিচ্ছি যে শ্বাস
গাছ ছাড়া আর, কে আর সে জন?

 

আলোর খবর
মোমিন মেহেদী

আলোর খবর ভালোর খবর
পত্রিকাতে পড়ি
পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান নিয়ে রোজ
শুদ্ধ জীবন গড়ি
এটাই আমার কাজ জানি তাই
শুদ্ধ পথে থাকি
সবুজ বাংলা গড়ার আশায়
রং তুলিতে আঁকি
এমন একটা দেশ গড়তে
বুকের ভেতর আশা
নদীজলে সাগর তলে
দেশের ভালোবাসা।

 

ব্যাঙের সর্দি
তাপস বর্মন

দেখো কান্ড জলে ভিজে
ব্যাঙের হলো সর্দি,
বিদেশ থেকে তালিম নিয়ে
এলেন কুমির বদ্যি।
নাড়ী টিপে প্রেশার মাপে
দেখে চোখের পাতা,
হিজিবিজি ওষুধ লিখে
ভর্তি করে খাতা।
নিমপাতা আর মাছের ডিমে
তৈরি করে বড়া,
চায়ের সঙ্গে খেতে হবে
লিকার হবে কড়া।
লঙ্কা গুঁড়ো মাখতে হবে
গায়ে ভালো করে,
রোদের বেলা হাঁটতে হবে
ঘন্টা ছয়েক ধরে।
পথ্য শুনে ব্যাঙের বাবা
ডিগবাজি খায় হেসে,
ব্যাঙ বাবাজির পিলে চমকায়
শুকনো কেশে কেশে।