বন্দিশ (কসবা) ভারতীয় রাগ সংগীতের চর্চা করে এমন একটি সংস্থা । সম্প্রতি এদের আয়োজনে বিড়লা অ্যাকাডেমী মঞ্চে হয়ে গেল শাস্ত্রীয় গানবাজনার ‘উইন্টার ফেস্টিভ্যাল’ অনুষ্ঠানটি। উল্লেখ্য যে, ২০১২ সালে সংস্থাটির পথ চলার সূচনা হয়। বিশিষ্ট সেতারি পন্ডিত পার্থপ্রতিম রায়ের উদ্যোগে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠা হয়। তারপরে একে একে চলে গেছে অনেকগুলি বছর। এবারের সন্ধ্যাটি আয়োজন করা হয় গুরু ও সঙ্গীতাচার্য পন্ডিত অজয় সিংহ রায়ের স্মরণে।
শুরুতেই ছিল অতিথি সম্মাননা পর্ব। ছিল বিশিষ্ট অতিথিদের বক্তব্য। এরপর বন্দিশ সংস্থা সম্পর্কে দু-চার কথা বললেন সংস্থার সম্পাদক সুলগ্না রায়। শাস্ত্রীয় সংগীতের আরো প্রচার ও প্রসার হওয়া দরকার… মনে করেন সুলগ্না। তারপর শুরু হলো মূল অনুষ্ঠান।
Advertisement
উপশাস্ত্রীয় গানের ডালি নিয়ে সন্ধ্যাটির শুরুর পর্ব সাজালেন সোহিনী রায় চৌধুরী। একে একে নিবেদন করলেন ঠুংরি (মিশ্র খাম্বাজ) ‘অব না বাজাও’, দাদরা (কৌশি-ধ্বনি) ‘শ্যাম তোহে নজরিয়া’ ও হোরি ‘রঙ্ সারি চুনারিয়া’ ভজন (মীরাবাঈ) ‘মতওয়ারো বাদর আয়ো’। এই সুললিত পর্বের সহযোগী ছিলেন— ইমন সরকার (তবলা) ও দেবাশিষ অধিকারী (হারমোনিয়াম)। এরপর ‘রাগ ও রবি’ রবীন্দ্রসংগীত ও হিন্দুস্তানী রাগ সংগীত থাকা ফিউশনধর্মী সিডিটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হলো । এই সিডিটিতে প্রাপ্ত সবকটি বন্দিশের রচনাকার প্রয়াত বিশিষ্ট সরোদবাদক ও গুরু পন্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। মঞ্চে এই সময় ছিলেন সংস্থার কর্ণধার পার্থপ্রতিম রায় ও সংস্থার সম্পাদকসহ সংগীতমহলের বিশিষ্ট কিছুজন।
Advertisement
আর, বিশেষ এই কাজটি সম্পন্ন করেন বেনারস ঘরের বিদগ্ধ তবলামায়েস্ত্রো পণ্ডিত সমর সাহা। শোনা গেল অজয় সিংহ রায়কে ঘিরে তাঁর স্মৃতিচারণা। এরপর ছিল সেতার ও সন্তুরের যুগলবন্দী। মঞ্চে আসেন আয়োজক পণ্ডিত পার্থপ্রতিম রায় (সেতার) ও সুবীর মুখার্জি। একত্রে চয়ন করেছিলেন রাগ চারুকেশি। বিলম্বের কারণে সময় ছিল সংক্ষেপিত। সেজন্য শোনা গেল সংক্ষিপ্ত আলাপপর্ব, এরপর ছিল গতকারি। বিলম্বিত গত (ঝাঁপতাল) ও দ্রুত গত (ত্রিতালে)। তারপর শোনালেন একখানি ধুন। এই পর্বে তবলায় সহযোগ প্রদান করেছিলেন অমিতানন্দ রায়। অনুষ্ঠানের একেবারে অন্তিম লগ্নে ছিল ধারওয়ার থেকে আগত বিশিষ্ট কন্ঠসংগীত শিল্পী পণ্ডিত অশোক নাদগীরের সংগীত পরিবেশনা। কিরানাঘরের এই বর্ষীয়ান গাইয়ে চয়ন করেছিলেন রাগ শঙ্করা।
বিলম্বিত ‘সো জানু রে জানু’ (একতাল) ও ‘কাল না পড়ে’ (ত্রিতাল)। অত্যন্ত অনুভূতিপূর্ণ এই পর্বের সমাপন ঘটে ভৈরবীতে ‘বোলে না বোল হমসে পিয়া’। তাঁর সাথে সহযোগিতায় ছিলেন— রাজনারায়ণ ভট্টাচার্য (তবলা) ও সায়ন চ্যাটার্জী (হারমোনিয়াম)।
Advertisement



