‘যে যত বেশি ভোটে লিড দেবে, সেখানে তত বেশি উন্নয়ন হবে’, এমনকি উন্নয়নে বরাদ্দের টাকাও মিলবে সব থেকে বেশি– নির্বাচনী সভা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে এমনই মন্তব্য করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। তাঁর এই মন্তব্যের জেরে খানিক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে।
প্রসঙ্গত, হাড়োয়া বিধানসভার উপনির্বাচনের তৃণমূলের প্রার্থী প্রয়াত সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামের পুত্র শেখ রবিউল ইসলামের সমর্থনে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত একটি নির্বাচনী সভাতে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। হাড়োয়া বিধানসভার অন্তর্গত ফলতি-বেলিয়াঘাটা অঞ্চলের ওই সভাতে নারায়ণের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, টলিউড অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বগণ। সভামঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এদিন মন্ত্রী রথীন ঘোষ এবং দলীয় নেতৃত্বের সামনেই নারায়ণ গোস্বামী বলেন, ‘আগামী ১৩ নভেম্বর ভোটের দিন সকলেই সকাল সকাল ভোট দিন। সেই সঙ্গে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোনীত প্রার্থী শেখ রবিউল ইসলামের জয় সুনিশ্চিত করুন।’
Advertisement
এরপরই মঞ্চে উপস্থিত অঞ্চল নেতাদের নাম ধরে নারায়ণ বলেন, ‘এখানে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সকলের সঙ্গেই আমার সম্পর্ক রয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে আমি বলতে চাই, যে এলাকা থেকে তৃণমূল প্রার্থী বেশি ভোট পাবে, সেখানে উন্নয়ন তত বেশি হবে জেলা পরিষদের টাকায়। যে যত বেশি লিড দেবে, সেখানে উন্নয়নের টাকাও বরাদ্দ হবে বেশি। বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা পরিষদকে ৭০০ কোটি টাকা দেয় জেলার উন্নয়নের জন্য৷ পাশের ত্রিপুরা রাজ্যের মোট বাজেটের থেকেও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বাজেট বেশি ৷ তাই, আপনারা তৃণমূল প্রার্থীকে বেশি করে ভোট দিন, যাতে তাঁর জয় সুনিশ্চিত করা যায়।’
Advertisement
এই বক্তব্যের নির্দিষ্ট ভিডিও ভাইরাল হতেই সমালোচনা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তবে পাল্টা নারায়ণ গোস্বামীর দাবি, দলীয় কর্মী, সমর্থকদের উৎসাহিত করতে এবং ভোট ময়দানে তাঁদের প্রতিযোগিতায় নামাতেই এই মন্তব্য। নারায়ণ গোস্বামীর ভাষায়, ‘এমনিই আমরা হাড়োয়া বিধানসভায় লক্ষাধিক ভোটে জিতব। সুষ্ঠ প্রতিযোগিতা সব ক্ষেত্রেই ভালো। একটা অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে আরেকটা অঞ্চলের নেতাদের সুষ্ঠ প্রতিযোগিতা হোক না! তাই উৎসাহ দিতেই এমনটা বলা।’ সুতরাং, ‘যত ভোট, তত উন্নয়ন’– বাস্তবে এটি দলীয় নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করার মূলমন্ত্র মাত্র, এমনটাই জানিয়েছেন নারায়ণ গোস্বামী।
Advertisement



