• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি হারিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা

দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ জেলা প্রশাসনের

নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েত পর্যায়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বুধবার জেলা প্রশাসনের বৈঠকে এই বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় দ্রুত কাজ শেষের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা।

এই বৈঠকে জেলা শাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত দপ্তরের প্রধান আধিকারিক, এসডিও ও বিডিও-রা। দপ্তরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, দুই প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা এবং বেচারাম মান্না উপস্থিত ছিলেন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বৈঠকে। এছাড়া ছিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, দিলীপ মণ্ডল, সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, বাপি হালদার সহ অন্যান্যরা।

Advertisement

বৈঠকে আলোচনায় উঠে আসে পঞ্চাদশ অর্থ কমিশনের তহবিল, স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন, রাস্তা তৈরির মতো বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রায় ৪১ শতাংশ প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলেও, অবশিষ্ট অংশের কাজে বিলম্ব হচ্ছে। এর পেছনে প্রযুক্তিগত প্রতিবন্ধকতা, বিল মঞ্জুরে দেরি এবং ঠিকাদারি সংস্থার ঢিলেমির মতো বিষয় জড়িত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রতিনিধিরা বৈঠকে জানিয়েছেন, নির্বাচনী বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ার আগেই যতটা সম্ভব প্রকল্প সম্পন্ন করার তাগিদ রয়েছে। কারণ বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে নতুন কোনও কাজ শুরু করা বা অসমাপ্ত প্রকল্পে তহবিল ব্যয় করা সম্ভব হবে না। সেজন্য ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে বেশ কিছু গাফিলতি এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ফান্ডের টাকা না দেওয়ার মতো সমস্যাগুলিকেও গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবার জেলার একাধিক বিডিও জানিয়েছেন, বরাদ্দ অর্থ থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়নের মধ্যে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকরা ব্লক পর্যায়ে পৃথক নজরদারি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দু’মাস বাদেই বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাবে। তার আগে কোনও কাজ অসম্পূর্ণ রাখা যাবে না। আধিকারিকদের আরও বেশি তৎপর হতে হবে। বৈঠকে দপ্তরের সচিব পি. উলগানাথন বিডিও ও প্রধানদের বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন এবং সময়সীমা বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন। বিভিন্ন ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন দপ্তরের আধিকারিকরা। কেন কাজ হচ্ছে না বা কোথায় সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে সরাসরি একাধিক পঞ্চায়েত প্রধানকে প্রশ্ন করেন মন্ত্রী থেকে আধিকারিকরা।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ জেলা। ফলে এখানে রাস্তা, সেচ, আবাস, পানীয় জলের মতো মৌলিক পরিকাঠামোগত প্রকল্পের সংখ্যা বিপুল। তবে রাজ্যের সর্বাধিক বরাদ্দ পাওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার অগ্রগতি অন্যান্য জেলার তুলনায় কম। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘আমরা প্রতিটি প্রকল্পের ক্ষেত্রেই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি। কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে তা চিহ্নিত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’

দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিটি অসমাপ্ত প্রকল্পের হালহকিকত পর্যালোচনা করে জেলা প্রশাসন রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট পাঠাবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্লক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে।

Advertisement