• facebook
  • twitter
Thursday, 15 May, 2025

গুলশন কলোনির তাণ্ডব নিয়ে কড়া বার্তা মেয়রের

কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট করে বলেন, 'যারা পুরকর্মীদের গায়ে হাত তুলেছে, তারা আমার গায়েই হাত তুলেছে।'

আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে ফের দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্ক ছড়াল। সোমবার সকালে কলকাতা পুরসভার পাইপলাইনের কাজ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন একদল শ্রমিক। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র ও বোমা নিয়ে তাণ্ডব চালায়। ভাঙচুর করা হয় জেসিবি মেশিন। এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

ঘটনার পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যারা পুরকর্মীদের গায়ে হাত তুলেছে, তারা আমার গায়েই হাত তুলেছে।’ তিনি জানান, ‘এটা সম্পূর্ণ গুন্ডামি। কেউ ছাড় পাবে না। কিছু পুলিশ অপদার্থের মতো কাজ করছে। আইন অনুযায়ী কড়া শাস্তি দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পুলিশের, আর এটা রীতিমতো অন্যায়।’

একই সুরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বোরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ। তিনি জানান, রবিবার রাত থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। সোমবার সকালে হাতে চপার ও বোমা নিয়ে দুষ্কৃতীরা হাজির হয়ে স্থানীয়দের হেনস্তা করে, টাকা না দিলে মারধর করে। এমনকি পুরসভার কর্মীদেরও ছেড়ে কথা বলেনি তারা। তাঁর দাবি, এই গোষ্ঠী নতুন নয়, আগেও এরাই একাধিক অপরাধে জড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রয়েছে। অথচ পুলিশ অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। অভিযুক্তদের বারবার জেল থেকে ছাড়া পাওয়া এবং ফের অপরাধে লিপ্ত হওয়া নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

সুশান্ত ঘোষ আরও বলেন, হামলাকারীরা কেউ গুলশনের বাসিন্দা নন। তাঁদের আসল ঠিকানা তপসিয়া। বাইরে থেকে এসে এখানে অপরাধ করছে তারা। এমনকি তাঁর দাবি, তাঁকে গুলি করার হুমকিও দিয়েছে ওই দুষ্কৃতীরা। তিনি মনে করেন, গুলশন কলোনিকে কেন্দ্র করে একসময় অনেকেই স্বার্থসিদ্ধি করত। তাঁর আসার পর সেটা বন্ধ হওয়ায় বারবার হামলার ঘটনা ঘটছে।

গুলশন কলোনি নামটি নতুন নয় কলকাতার অপরাধ মানচিত্রে। কসবায় এক পুরপ্রতিনিধিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টার ঘটনার তদন্তেও উঠে এসেছিল এই কলোনির নাম। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও জানিয়েছে, গুলশন এলাকায় একাধিক গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও সিন্ডিকেট বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলেছে। এর জেরে আরও বড়সড় অশান্তির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এই পরিস্থিতিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে শুরু করে শহরের প্রশাসনিক প্রধানরা যখন একের পর এক অভিযোগ তুলছেন, তখন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও চাপ বাড়ছে লালবাজারের উপর। মেয়রের কড়া বার্তার পর পুলিশ এবার কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকেই নজর শহরবাসীর।