আড়িয়াদহের ‘ত্রাস’ জয়ন্ত সিং-য়ের বাড়ি ভাঙতে এবার আদালতের দ্বারস্থ হল কামারহাটি পুরসভা। শুক্রবার তাঁর বেআইনি প্রাসাদোপম অট্টালিকা ভেঙে ফেলার নির্দেশিকা জারি করেও পিছু হটতে হয়। কারণ জয়ন্তর বাড়ি নিয়ে কিছু মন্তব্য ও দাবি সামনে এসেছে। কেউ ওই বাড়ির ওকূপায়ার বলে দাবি করে হাই কোর্টে মামলা করেছেন। কেউ আবার রটিয়ে দিয়েছে, বাড়ি ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছে, অথচ বাড়ির লোকজনদের জানানো হচ্ছে না। আবার কেউ বলছেন বাড়ি ভাঙা রদ হয়েছে। সেজন্য কামারহাটি পুরসভা বিষয়টি নিয়ে আইনি সংশয়ের মধ্যে রয়েছে। পুরসভা ভেবে পাচ্ছে না, বাড়ি ভাঙার কাজ এখনই শুরু করবে, নাকি আরও কিছুদিন অপেক্ষা করবে। বিষয়টি জানতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। এরই ব্যাখ্যা চেয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছে পুরসভা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়ন্তর বিতর্কিত তিনতলা বাড়িটি অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ করা হয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই এই অবৈধ বাড়ি নিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন এক ব্যক্তি। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের বিচারক গৌরাঙ্গ কান্তর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই বাড়ি ভেঙে ফেলতে হবে। হাই কোর্টের সেই নির্দেশ কামারহাটি পুরসভায় আসা সত্ত্বেও বাড়ি ভাঙা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। জবাবে জানানো হয়, এই বাড়ি ভাঙার জন্য পুরসভার কাছে উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে কামারহাটি পুরসভার পুর বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে জয়ন্ত সিংয়ের প্রাসাদোপম বাড়ি দ্রুত ভেঙে ফেলতে হবে। এরপরও জয়ন্তর বাড়ি ভাঙা নিয়ে টানাপোড়েন চলছে।
এ ব্যাপারে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানিয়েছেন, “হাই কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে আগামী শুক্রবার ওই বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু ভাঙার কাজ আটকানোর জন্য হাই কোর্টে একের পর এক মামলা হচ্ছে। তাই পুরসভার পক্ষ থেকে হাইকোর্টের কাছে কিছু ব্যাখ্যা চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী শুক্রবার থেকে ভাঙার কাজ শুরু করা যাবে কিনা, তার ব্যাখ্যা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছি।”
উল্লেখ্য, কামারহাটি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আড়িয়াদহের মৌসুমী মোড় সংলগ্ন প্রতাপ রুদ্র লেনে জয়ন্তর দু’টি বাড়ি রয়েছে। একটি পৈতৃক, সেটিতে খাটাল রয়েছে। আরেকটি পৈতৃক বাড়ির কাছেই একটি পরিত্যক্ত জমিতে জলাশয়ের একাংশ বুজিয়ে দুধ সাদা প্রাসাদোপম বাড়ি নির্মাণ করেছিল জয়ন্ত। অভিযোগ উঠেছে, এই জমিটি জয়ন্তর নিজের নয়। বছর তিনেক আগে জমিটি সে কবজা করে রাতারাতি সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু করে। মাত্র এক বছরের মধ্যেই সেখানে চোখ ধাঁধানো তিনতলা বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়।