কলকাতা পুরসভার সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ ঘিরে বুধবার চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নিউ মার্কেট থানার কাছে কংগ্রেসের কর্মসূচি ছিল। পুরসভার সামনেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয়। এরপর কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও বেশ কয়েকজনকে আটক করে। অন্যদিকে এদিন বড়বাজারে একটি পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। বুধবার সকালে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে নারায়ণ প্রসাদ বাবুলাল লেনে বাড়িটির একাংশ ভেঙে পড়ায় আতঙ্ক ছড়ায়। ঘটনায় অবশ্য কেউ হতাহত হননি। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ বাড়িটির কোনও মেরামতি হয়নি। স্থানীয় কাউন্সিলর মহেশ শর্মার ক্ষোভ, তাঁর ওয়ার্ডে এই ধরনের বহু জীর্ণ বাড়ি রয়েছে, কিন্তু বাড়ির মালিকেরা কোনও সহযোগিতা করেন না।
সম্প্রতি বাঘাযতীনে ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়ার পর শহরের বিভিন্ন জায়গায় একই ধরনের ঘটনা সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্য কংগ্রেসের তরফে কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভকারীরা ‘দুর্নীতির আখড়া কেএমসি’ লেখা পোস্টার হাতে নিয়ে প্রতিবাদ দেখান। তাঁদের দাবি, গার্ডেনরিচের বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনার পরও কলকাতা পুরসভা কোনও শিক্ষা নেয়নি, তাই একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ছে বা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বহুতল সম্পর্কে কংগ্রেসের অভিযোগ, বেআইনিভাবে ৮০ বছরের পুরনো বাড়ির ওপর তিনতলা নির্মাণ করা হয়েছিল। তারা ওই প্রোমোটারের গ্রেফতারির দাবিও তোলে।
Advertisement
কলকাতা কর্পোরেশনের সামনে ওই মিছিলকে বাধা দেয় পুলিশ। নিউমার্কেট থানার কাছে গার্ডরেল দিয়ে পথ আটকানো হয়। কর্মীরা গার্ডরেল ফেলে এগোতে চাইলে বিক্ষোভ শুরু হয়। কংগ্রেস সভাপতি জানান, প্রতিনিধি দল মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে স্মারকলিপি দিতে চায়। কিন্তু জানা যায়, মেয়র পুরসভায় উপস্থিত নেই। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, অন্তত অন্য কোনও মেয়র কাউন্সিল সদস্য কিংবা পুরসভার দায়িত্বশীল ব্যক্তির হাতে তাঁরা স্মারকলিপি দিতে চান। পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কর্মীদের নিয়ে ধর্নায় বসে পড়েন। যার ফলে বেশ কিছুক্ষণ ধর্মতলায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সভাপতি শুভঙ্কর সরকার অভিযোগ করেন, কলকাতায় বেআইনি বহুতল বাড়ির কারণে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এর দায় মেয়রের নিতে হবে। তিনি দাবি করেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ পুরসভার কোষাগার থেকে নয়, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের থেকে আদায় করতে হবে। শেষপর্যন্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের কাছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল ডেপুটেশন জমা দেয়।
Advertisement
অন্যদিকে বড়বাজরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর মহেশ শর্মা বলেন, ‘কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে এই বিষয়টি বেশ কয়েকবার তুলেছি। বাড়ির মালিকেরা ভাড়া নেন, কিন্তু মেরামত করেন না। পুরসভাকেও সহযোগিতা করেন না।’ মহেশ আরও জানিয়েছেন, তিনি আগেই মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা তুলে দিয়েছেন এবং মেয়র এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন।
Advertisement



