কসবা কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতের নাম সোমশুভ্র মণ্ডল। ঘরের দেওয়ালে লেখা সুইসাইড নোটে তাঁর নামের উল্লেখ ছিল। অভিযোগ, অটোচালক সোমনাথ রায়কে ঋণ পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন সোমশুভ্র। এর বিনিময়ে তিনি কমিশন নিয়েছিলেন। শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ সোমশুভ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বাসিন্দা। শনিবার তাঁকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। কসবায় বাবা-মা এবং শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় এই নিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার। প্রথমে সোমনাথের মামা এবং মামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারপর পুলিশের জালে ধরা পড়েন চঞ্চল মুখোপাধ্যায় নামে এক দালাল।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহখানেক আগে কসবার হালতুতে সোমনাথ, সুমিত্রা এবং তাঁদের আড়াই বছরের পুত্রসন্তানের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুত্রের মৃতদেহ কাপড় দিয়ে নিজের দেহের সঙ্গে বেঁধেছিলেন সোমনাথ। তার পর নিজে গলায় দড়ি দেন। ওই ঘরের দেওয়ালেই পেন্সিল দিয়ে লেখা সুইসাইড নোট মেলে। পাহাড়প্রমাণ ঋণের বোঝা চেপেছিল সোমনাথের মাথায়। একই সঙ্গে সন্তানের চিকিৎসার জন্যও প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছিল। অটো চালিয়ে এত খরচ জোগাড় করতে পারছিলেন না তিনি। সেই সঙ্গে ছিল সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ। সেই কারণে সংসার টানতে না-পেরে সোমনাথ সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন, অনুমান পুলিশের। এই ঘটনার পর সুমিত্রার বাবা এবং বোন থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমশুভ্রর মাধ্যমেই ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন সোমনাথ। একটি ব্যাঙ্ক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা, একটি সংস্থা থেকে ১ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা, মোবাইলের একটি অ্যাপের মাধ্যমে দু’লক্ষ টাকা এবং আরও একটি সংস্থার কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকা ঋণ পাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন সোমশুভ্র। প্রতিটি ঋণের জন্য আলাদা ভাবে কমিশন নেন তিনি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, তিন বছরের শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। সোমনাথ এবং সুজাতার মৃত্যু হয়েছে গলায় দড়ি দেওয়ার কারণে।