• facebook
  • twitter
Wednesday, 31 December, 2025

এসআইআর শুনানিতে ডাক প্রাক্তন বাম মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কেও

যে রাজ্যে এক সময় টানা ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট, সেখানে বর্তমানে লোকসভা ও বিধানসভা— দু’টি ক্ষেত্রেই বাম প্রতিনিধি শূন্য।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ পরিমার্জন প্রক্রিয়া ঘিরে ‘নো ম্যাপিং’ বিতর্ক ক্রমেই বাড়ছে। সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্ট নাগরিক— একের পর এক ব্যক্তিকে শুনানির জন্য তলব করা হচ্ছে। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল বাম জমানার প্রাক্তন মন্ত্রী ও রায়দিঘির প্রাক্তন বিধায়ক কান্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। আগামী ২ জানুয়ারি তাঁকে মথুরাপুর দুই নম্বর ব্লক অফিসে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এই তলব ঘিরে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হলেও ব্যক্তিগত ভাবে তেমন বিচলিত নন বর্ষীয়ান এই সিপিএম নেতা। বুধবার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাফ বক্তব্য, ‘ডেকেছে যখন যাবই। কেন ডেকেছে জানি না। কারণ জানতে তো যেতেই হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছব এবং সব রকম সহযোগিতা করব।’ তিনি ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, শুনানির নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি উপস্থিত থাকবেন।

Advertisement

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এসআইআর-এর এনুমারেশন ফর্মে আত্মীয়তার সম্পর্ক সংক্রান্ত কিছু তথ্য পূরণ না থাকায় প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

কমিশনের আরও একটি সূত্রের দাবি, আগের এসআইআর-এর সময় প্রস্তুত হওয়া ভোটার তালিকার সঙ্গে বর্তমান নথির অমিল অথবা সম্ভাব্য তথ্যগত ত্রুটির কারণেই কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে শুনানিতে ডাকা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁকে কোন কোন নথির আসল শংসাপত্র সঙ্গে আনতে হবে, তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে— যাতে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

কমিশনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, শুনানির ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হলে বা অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজন পড়লে প্রাক্তন মন্ত্রী নিজের বুথ স্তরের আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তবে এ সবের মধ্যেও কান্তির ছোট্ট মন্তব্য— ‘ডেকেছে যখন যাবই।’

এসআইআর শুনানির ক্ষেত্রেও সেই পরিচিত ছবি বদলাচ্ছে না। নির্ধারিত সময়ের আগেই উপস্থিত থাকার বার্তা দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন প্রবীণ এই বাম নেতা। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, ‘নো ম্যাপিং’ সমস্যায় কত জনকে এ ভাবে শুনানির মুখোমুখি হতে হবে, এর শেষ কোথায়?

উল্লেখ্য, প্রায় দেড় দশক আগে রাজ্যে বাম জমানার অবসান ঘটেছে। যে রাজ্যে এক সময় টানা ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। বর্তমানে লোকসভা ও বিধানসভা— দু’টি ক্ষেত্রেই বাম প্রতিনিধি শূন্য। তবু সুন্দরবন সংলগ্ন রায়দিঘি এলাকায় আজও আলাদা গুরুত্ব ধরে রেখেছেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। আয়লা, আমফান-সহ একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়াতে তাঁকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বারবার ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় মহলে এই প্রবাদ আজও হামেশাই শোনা যায়— ‘ঝড়ের আগে কান্তি আসে।’

Advertisement