• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপিতে অন্তর্কলহ, ভবানীপুর দখলের লড়াই থেকে অনেক দূরে

নিজের এলাকা বেহালায় গত মার্চ মাসে আক্রান্ত হন অনুপম। সভাপতি পদে ‘পুনর্নির্বাচিত’ হওয়ার জন্য সংবর্ধনা নিতে গিয়েই সংঘাতের সম্মুখীন হন তিনি।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বছর ঘুরতেই বিধানসভা নির্বাচন। সাকুল্যে হাতে রয়েছে আর মাত্র ১০ মাস। সেই নির্বাচনে ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রেখেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু কীভাবে সম্ভব সেই লড়াই, যখন দলের নেতারা নিজেদের মধ্যেই অন্তর্কলহে লিপ্ত রয়েছেন?

জানা গিয়েছে, কার্যত গোটা দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে বিজেপি ব্যস্ত রয়েছে  ‘মুষলপর্বে’। দলের জেলা সভাপতি নিজের এলাকায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাও আবার নিজের দলের কর্মীদের হাতেই। বহু কর্মীকে বঞ্চিত রাখার অভিযোগ উঠছে ‘সক্রিয় সদস্যপদ’ থেকে। আড়াই মাস ধরেও গঠন হয়নি জেলা কমিটি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বেঁধে দেওয়া কমিটি গঠনের ‘ফর্মুলা’ মানতে রাজি হচ্ছেন না খোদ তা জেলা সভাপতি। এমনটাই দাবি দলের  একাংশের। আর এই মুষলপর্বের মধ্যেই রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন আরও এক বিজেপি নেতা। তিনি হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, মোক্ষম সময়ে ‘ব্রহ্মস’ ছুড়বেন!

Advertisement

উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় এ বারের সাংগঠনিক নির্বাচন পর্বে সভাপতি বদল করেনি জেলা বিজেপি। উত্তরে রাখা হয়েছে তমোঘ্ন ঘোষকে এবং দক্ষিণে রয়েছেন অনুপম ভট্টাচার্য। বিজেপি নেতৃত্ব গত মার্চ মাসে সভাপতি পদে তাঁদের বহাল রাখার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জুনের প্রথম সপ্তাহ কেটে গেলেও নিজেদের কমিটি গড়তে পারেননি তমোঘ্ন, অনুপমরা। এদিকে অনবরত অশান্তি বহাল রয়েছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, নিজের এলাকা বেহালায় গত মার্চ মাসে আক্রান্ত হন অনুপম। সভাপতি পদে ‘পুনর্নির্বাচিত’ হওয়ার জন্য সংবর্ধনা নিতে গিয়েই সংঘাতের সম্মুখীন হন তিনি। সেই ঘটনার জেরে দল থেকে চারজনকে ‘বরখাস্ত’ও করেছে বিজেপি। যদিও ক্ষোভের আঁচ তাতে বিন্দুমাত্র কমেনি। অন্তর্কলহ এখনও অব্যাহত রয়েছে। আর সেই অশান্তির নবতম সংযোজন, কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যের উপস্থিতিতে দু’পক্ষের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি।

কিন্তু কেন এই অশান্তি? জানা গিয়েছে, দলে যাঁরা অনুপমের শিবিরে নন, তাঁদের ‘সক্রিয় সদস্যপদ’ পাওয়া আটকে দিয়েছেন অনুপম। এমনটাই দাবি করেছেন দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি কর্মীদের একটি অংশ, যা দলের নিয়ম বিরুদ্ধ। বিজেপি নেতৃত্ব সংগঠন পর্বের শুরুতেই ঘোষণা করেছিলেন, দলের যে কর্মীরা অন্তত ৫০ জনকে ‘প্রাথমিক সদস্য’ হিসেবে নিযুক্ত করতে পারবেন, তাঁরা ‘সক্রিয় সদস্যপদ’ পাবেন। সেই লক্ষ্যমাত্রা যাঁরা পূরণ করেছেন, তাঁদের অনেককে ‘সক্রিয় সদস্য’ হতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার ওই সাংগঠনিক জেলায় বেশ জনপ্রিয়। এইসব বঞ্চিত ও অবহেলিত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন আলিপুর চত্বরের প্রভাবশালী মুখ রাকেশ সিংহ, জেলা বিজেপির প্রাক্তন সহ-সভাপতি ওঙ্কারনাথ চক্রবর্তী, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সঞ্জু দাশগুপ্ত, বেহালা অঞ্চলের প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি দিব্যেন্দু সামন্ত, ইন্দ্রনাথ দুয়ারি-সহ বেশ কিছু নেতার নাম। এইসব নেতাদের নাম দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি কর্মীদের মুখে মুখে ফিরছে, যাঁদের ‘সক্রিয় সদস্য’ হওয়া অনুপম এবং বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিংহ আটকে রেখেছেন বলে বিজেপির একাংশের অভিযোগ।

Advertisement