হেপাটাইটিসের ওষুধ পরীক্ষার অনুমতি চাইল জাইডাস

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কাজে আসতে পারে হেপাটাইটিসের ওষুধ। এমনটাই মনে করছে ভারতের অন্যতম বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জাইদাস ক্যাডিলা।

Written by SNS New Delhi | May 8, 2020 3:00 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কাজে আসতে পারে হেপাটাইটিসের ওষুধ। এমনটাই মনে করছে ভারতের অন্যতম বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জাইদাস ক্যাডিলা। চিন ও কিউবাতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় হেপাটাইটিসের ওষুধ ইতিমধ্যেই ব্যবহার করা হচ্ছে। এবার দেশেও এই ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছে অনুমতি চাইল জাইদাস ক্যাডিলা।

পেগিলেটেড ইন্টারফেরন আলফা-টুবি এই ওষুধ হেপাটাইটিস বি ও সি এর সংক্রমণ কমাতে ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগ সারাতেও ইন্টারফেরন প্রেসক্রাইব করেন ডাক্তাররা। এই ওষুধ সার্সকভ ২ ভাইরাসের সংক্রমণও ঠেকাতে পারবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। চিনে করোনার চিকিৎসা সংক্রান্ত সরকারি গাইডলাইনেও হেপাটাইটিসের ওষুধের উল্লেখ আছে।

ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা অন্য কোনও প্যাথোজেন শরীরে ঢুকলে তাকে ঠেকানোর জন্য প্রাথমিক একটা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে শরীরই। জাইদাস ক্যাডিলার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তার প্রতিরোধে শরীরে টাইপ-১ ইন্টারফেরন তৈরি হয়।

হেপাটাইটিসের ওষুধ পেগিলেটেড ইন্টারফেরন হল তেমনই একটি টাইপ-১ ইন্টারফেরুন। এর কাজ হল কোষের মধ্যে আরএনএ ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি করে সংখ্যায় বাড়ার প্রক্রিয়াটাকে থামিয়ে দেওয়া। পাশপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ানো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড সংক্রমণের মতোই ভয়ঙ্কর হেপাটাইটিসের রোগও। সংক্রামিত রক্ত থেকে হেপাটাইটিস-সি ভাইরাস ছড়ানোর ভয় থাকে। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। বহু থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোফিলিয়া রোগী এর শিকার হন।

দীর্ঘদিন হেপাটাইটিসের চিকিৎসা না করিয়ে রেখে দিলে তার জের হতে পারে মারাত্মক। সিরোসিস বা লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিই বেশি। সার্সকভ ২ ভাইরাসের সংক্রমণের সঙ্গে এর মিল আছে। তাই মনে করা হচ্ছে হেপাটাইটিসের ওষুধ করোনার সংক্রমণ কমাতেও কাজে দিতে পারে।

ক্যাডিলা হেলথকেয়ারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শার্ভিল পটেল বলেছেন, মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করছি আমরা। কেন্দ্রের অধীনস্থ বায়োটকনোলজি বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষেই পেগিলেটেড ইন্টারফেরুন আলফা-বি ওষুধের গবেষণা চালানো হচ্ছে। কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে এই ওষুধ কতটা কাজে দিতে পারে সেটা জানতে ইন্টারফেরনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য দেশের ড্রাগ কন্ট্রোলারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস মেডিক্যাল ব্রাঞ্চে ইন্টারফেন আলফা ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। ওই ইউনিভার্সিটির তরফে দাবি করা হয়েছে, আরএনএ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা আছে ইন্টারফেরন আলফার।

চিন, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাতে ইন্টারফেরন আলফা-বি ওষুধের গবেষণা চলছে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, এই ওষুধ ভাইরাসের সংক্রমণ কমায় এবং সাইটোকাইনের অধিক ক্ষরণও বন্ধ করে।

জার্মানির জোহানেস গুটেনবার্গ ইউনিভার্সিটি দাবি করেছে, হেপিটাটাইসিস-সি সংক্রমণ কমাতে পারে এমন অনেক ওষুধই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামাতেও কাজে আসতে পারে।