কুম্ভমেলার স্নানে পুণ্য করতে গিয়ে মৃত্যুর সাক্ষাৎ। এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে জানানো হয়েছে, প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য হিসাবে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যদিও সেখানে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন মৃত্যুর সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি। মেলায় গিয়ে নিখোঁজ এখনও অনেকে। এই নিখোঁজের তালিকায় রয়েছেন বাংলার আরও ৭জন। ঘটনায় উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির অভিযোগ, যোগী রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে যথাযথ সহায়তা মিলছে না। নিখোঁজ ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে এই বিতর্কের মাঝেই যোগী সরকারের বিরুদ্ধে স্বজনহারাদের পরিবারকে মৃতদেহ নিয়ে যেতে জোর করে ডেথ সার্টিফিকেট বা পোস্টমর্টেমের রিপোর্টের বদলে চিরকুট ধরানোর অভিযোগ উঠেছে।
এই চিরকুট নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন মৃতদের স্বজনরা। কারণ সরকারিভাবে ডেথ সার্টিফিকেটের কোনও কাগজই যদি না থাকে তাহলে কীভাবে ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য আবেদন করবেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা? গোটা ঘটনায় যোগী রাজ্যে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন সামনে আসছে।
পাশাপাশি কুম্ভমেলায় মৌনী অমাবস্যায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত ৩০ জনের তালিকায় রয়েছেন বাংলার তিন বাসিন্দা— কলকাতার বিজয়গড়ের বাসিন্দা বাসন্তী পোদ্দার (৬৫), পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীর উর্মিলা ভুইয়াঁ (৭৮) এবং পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার কেন্দার বিনোদ রুইদাস (৪১)। তিনটি পরিবারেরই অভিযোগ, পোস্টমর্টেম এবং ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই মৃতদেহ নিতে বাধ্য করা হয়েছে। এমনকী সাদা কাগজের চিরকুটে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে, ‘প্রিয়জনের মৃতদেহ পেলাম।’ যে চিরকুট যোগী প্রশাসন ধরাচ্ছে তাতে মৃত্যুর কারণ বা ঘটনাস্থলের কোনও উল্লেখও নেই, নেই সরকারি কোনও স্ট্যাম্পও। এই কাগজ যে সরকারি নথি তা প্রমাণ করা দায়। এখন এই চিরকুট নিয়েই অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কি সেই রাতে পদপিষ্ট মৃত্যুর সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি, যা লুকোতে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে সরকারিভাবে ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। সেই সূত্রেই মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও সামনে আসছে।