জল জীবন মিশন প্রকল্প নিয়ে এবার সুর চড়াল রাজ্যের শাসক দল। মনরেগা, সড়ক, সর্বশিক্ষা অভিযান এবং আবাস যোজনার পর জল জীবন মিশন প্রকল্পে বাংলার বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে। তৃণমূলের দাবি অনুসারে এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া প্রায় ২ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। এই বকেয়া টাকা মেটানোর দাবিতে জলশক্তি মন্ত্রী চন্দ্রকান্ত রঘুনাথ পাটিলের সঙ্গে দেখা করল তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধি দল। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তবে বকেয়া টাকা কবে মিলবে, মন্ত্রী তা জানাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
বুধবার বকেয়া টাকা মেটানোর দাবিতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিআর পাতিলের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের সাংসদের দশ জনের প্রতিনিধি দল। দলে ছিলেন লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সাংসদ সৌগত রায়-সহ ৮ জন সাংসদ ও সাগরিকা ঘোষ-সহ ২ জন রাজ্যসভার সাংসদ। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে এই প্রকল্পের টাকা বন্ধ থাকার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে শেষবার মিলেছিল ২ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। তবে দেওয়ার কথা ছিল ৫ হাজার ৫০ কোটি টাকা। কেন্দ্র টাকা আটকে রেখে বাংলাকে বঞ্চিত করছে বলে অভিযোগ শাসক দলের।
Advertisement
চলতি আর্থিক বর্ষে অর্থাৎ ২০২৫-২৬ সালে কেন্দ্র কোনও টাকাই বরাদ্ধ করেনি বলে অভিযোগ তৃণমূলের। পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৪০১ কোটি টাকা খরচ করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। যাতে সাধারণ মানুষ জল থেকে বঞ্চিত না হয়। অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা সচল রাখতে রাজ্য সরকার নিজস্ব রাজকোষ থেকে অতিরিক্ত খরচ চালাচ্ছে। যার ফলে রাজ্যের কোষাগারে বিপুল চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস। পানীয় জলের টাকা আটকে রাখা প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে অভিযোগ তৃণমূলের। বৈঠক শেষে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়ে দ্রুত বাংলার বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি। মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ভালো আলোচনা হয়েছে। কবে টাকা দিতে পারবে তা জানাতে পারেননি। ক্যাবিনেটের ছাড়পত্র মেলেনি বলে জানতে পেরেছি।‘
Advertisement
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে জল জীবন মিশন প্রকল্প চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই বছর স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেক দেশের প্রতিটি বাড়িতে স্বচ্ছ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘হর ঘর জল’ স্লোগান দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সমান অনুপাতে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকার এই প্রকল্পের ব্যয়ভার বহন করে। কোভিডের সময় প্রকল্পে প্রভাব পড়লেও ২০২১ সাল থেকে আগের মতোই চলছে এই প্রকল্প। অন্যান্য প্রকল্পের মতো জল মিশন প্রকল্পেও কেন্দ্র প্রয়োজনীয় টাকা বাংলাকে দিচ্ছে না অভিযোগ তুলেছে
বাংলার শাসকদল।
Advertisement



