• facebook
  • twitter
Saturday, 5 October, 2024

ইডির পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর যোগেশ গুপ্তার বদলি, বাড়ছে রহস্য

রাজ্যের চলমান একের পর এক দুর্নীতির তদন্তের মুখে কেন পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টরকে বদলি করা হল? এটা কি কোনও রুটিন বদলি? নাকি এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে কোনও গোপন রহস্য? বিষয়টির অনুসন্ধানে উঠে আসছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

কলকাতায় ইডির স্পেশাল ডিরেক্টর যোগেশ গুপ্তাকে বদলি করে দিল দিল্লির সদর দপ্তর। তাঁকে পূর্বাঞ্চলীয় দপ্তরের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিল্লির স্পেশাল ডিরেক্টর (অ্যাডজুডিকেশন) করে পাঠানো হয়েছে। দুঁদে আইআরএস অফিসার বিবেক ওয়াদেকর তাঁর জায়গায় পূর্বাঞ্চলের ডিরেক্টর পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পেলেন। আচমকা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কলকাতার দপ্তরের এই কর্তাকে বদলি নিয়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট চর্চা শুরু হয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যের চলমান একের পর এক দুর্নীতির তদন্তের মুখে কেন পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টরকে বদলি করা হল? এটা কি কোনও রুটিন বদলি? নাকি এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে কোনও গোপন রহস্য? বিষয়টির অনুসন্ধানে উঠে আসছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সূত্রের খবর, একাধিক দুর্নীতির তদন্ত মামলায় একের পর এক অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় নাকি এর প্রধান কারণ। তাঁর সময়ে রাজ্যের চিট ফান্ড থেকে শুরু করে আয়ের অতিরিক্ত মামলা সহ একাধিক ক্ষেত্রে তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছিল না। সেজন্য ক্ষুব্ধ মোদী সরকার। ক্ষুব্ধ এই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দিল্লির সদর দপ্তর। এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির ওপর বিভিন্ন মহল থেকে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। সম্প্রতি মোদী সরকার বিষয়টি নিয়ে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রসঙ্গত কলকাতা থেকে সদ্য বদলি হওয়া যোগেশ গুপ্তা হলেন ৯৩ সালের কেরালা ক্যাডারের আইপিএস অফিসার।

এদিকে যোগেশ গুপ্তাকে বদলি করে কেন বিবেক ওয়াদেরকরকে বাছাই করা হল, তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। সূত্রের খবর, দুঁদে আইআরএস অফিসার বিবেক গুপ্তা হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের খুবই বিশ্বস্ত মুখ। নয়াদিল্লির প্রশাসনিক অলিন্দে কান পাতলে সেই গুঞ্জনই ভেসে আসে। সেজন্য বাংলার একাধিক দুর্নীতির তদন্তে তাঁর ওপর ভরসা রেখেছে কেন্দ্র সরকার।

জানা গিয়েছে, দুঁদে এই রেভেনিউ সার্ভিসের অফিসার বিবেক ওয়াদেরকরকে ২০১৮ সালে ইডির স্পেশাল সেক্রেটারি পদে নিয়োগ করে ক্যাবিনেট কমিটি অফ অ্যাপয়েন্টমেন্ট। তিনি ১৯৯১ ব্যাচের আই আর এস অফিসার। রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন এবং ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে এই বিবেক ওয়াদেকর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি এই আর্থিক অনিয়মের তদন্ত প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখার জন্য আন্তঃকমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, সামনেই ২০২৬-এর বিধানসভা ভোট। মাঝখানে রয়েছে ২০২৫ সাল। মাত্র একটি বছর। তারপর শুরু হয়ে যাবে প্রস্তুতি। তার মধ্যেই কি চিটফান্ড সহ অন্যান্য দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের শাসকদলকে বিশেষভাবে দাগিয়ে দিতে চাইছে কেন্দ্র? সেই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ এই চিটফান্ড কাণ্ডে রাজ্যের অনেক রাজনৈতিক নেতার নাম জড়িয়েছে। তাঁদের হিসাব বহির্ভুত সম্পত্তির উৎস নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে। এইসব জল্পনার মধ্যে রাজ্যের গরুপাচারেরও নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেজন্য ছাব্বিশের ভোটের আগে এইসব মামলায় তদন্তের গতি আনতে চাইছে কেন্দ্র। যাতে রাজ্যের শাসকদলের উদ্বেগ বাড়ানো যায়।