ওয়েনাড়, ১ আগস্ট: জন্মদিন পালনের বিশেষ পরিকল্পনায় কাল হয়ে দাঁড়াল ওড়িশার এক ডাক্তারের জীবনে। স্ত্রীকে নিয়ে কেরলের পাহাড়ি এলাকায় জন্মদিন পালনের পরিকল্পনায় যে তাঁর জীবনের নিয়তি হয়ে যাবে, এটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি এই দম্পতি। এখনও এক বছর পূর্ণ হয়নি। সদ্য কয়েকমাস বিয়ে হয়েছে ডাক্তার বিষ্ণুপ্রসাদ চিনহারা ও প্রিয়দর্শিনী পালের। সেজন্য নিজের বিয়ের প্রথম বছরের জন্মদিন পালনে কেরলের পাহাড়ি এলাকাকে বেছে নিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। সেই অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে সঙ্গে ছিলেন আরও দুই চিকিৎসক বন্ধু সুক়ৃতি মহাপাত্র এবং স্বাধীন পণ্ডা। ২৭ জুলাই ছিল বিষ্ণুপ্রসাদের জন্মদিন। তার একদিন আগে ২৬ জুলাই যান বেঙ্গালুরু। সেখান থেকে সোমবার ওয়েনাড়ে চলে আসেন তাঁরা চারজনে। পাহাড়ের কোলে চুরালমালা গ্রামে হোম স্টে করেন তাঁরা। রাত পোহালে সেখানেই হবে বিচিত্র জন্মদিনের অনুষ্ঠান। তাঁর আগে সোমবার রাতেই সব শেষ।
গভীর রাতে চুরালমালার ওপরে নেমে এলো চরম প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আচমকা হড়পা বানে মাটির নিচে চাপা পড়ে গেল গোটা গ্রাম। পাহাড়ের ওপর থেকে বড় বড় পাথরের চাঁই আর জলের সঙ্গে ঘন কাদায় ঢেকে যায় জনবসতি। গোটা গ্রাম তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই ঘুমের মধ্যেই সলিল সমাধি হল অনেকের। বিষ্ণুপ্রসাদরা যে বাড়িতে ছিলেন, প্রবল হড়পা বানে ধসে যায় সেই বাড়ি। মুহূর্তেই সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। তারপর কারও কোনও খোঁজ নেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। ধসের কয়েক ঘণ্টা পরে মঙ্গলবার স্ত্রী প্রিয়দর্শিনীকে উদ্ধারকারীরা খুঁজে পেলেও বিষ্ণুপ্রসাদ এবং তাঁর দুই চিকিৎসক সহকর্মীর কোনও খোঁজ মেলেনি। বিষ্ণুপ্রসাদের বোন এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “২৭ জুলাই দাদার জন্মদিন ছিল। তার আগের দিন রাত সাড়ে ১০টাতেও কথা হয়েছে দাদা-বৌদির সঙ্গে। ওরা একটা হোমস্টেতে উঠেছিল।”
Advertisement
এদিকে প্রায় ২৪ ঘন্টা পর চুরালমালা গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হয় বিষ্ণুপ্রসাদের দেহ। ওই দিনই জীবিত অবস্থায় চিকিৎসক সুকৃতিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যদিও তাঁর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। কিন্তু আর এক চিকিৎসক স্বাধীন পণ্ডা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
Advertisement
Advertisement



