শবরীমালা বিতর্ক আরও বড় বেঞ্চে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট

বিজেপির দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যেন কেরল সরকার কার্যকর না করে। শবরীমালা মন্দিরে যেন কোনও ভাবেই মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া না হয়।

Written by SNS New Delhi | November 15, 2019 6:23 pm

শবরীমালা মন্দিরে ভক্তদের ভিড়। (File Photo: IANS)

শবরীমালা মন্দিরে কমবয়সী মহিলারা ঢােকার অনুমতি পাবেন কি পাবেন না? গত বছর সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, কাউকে মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়া সংবিধানবিরােধী। এই রায়ের বিরােধিতা করে ৬০টিরও বেশি পিটিশন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে।

এদিন শীর্ষ আদালত সেই আবেদনগুলি বিবেচনার জন্য পাঠাল আরও বড় বেঞ্চে। এখনও পর্যন্ত পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ ওই আবেদন শুনছিল। এবার সাত বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ আবেদনগুলি বিবেচনা করবে।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশাধিকার নিয়ে বিতর্কটি এখন বৃহত্তর আকার নিয়েছে। সব বয়সী মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক ছিলই। একই সঙ্গে মুসলিম ও পার্সি মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে।

২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় দেয়, ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলারাও আয়াপ্পা মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় কার্যকর করতে পারেনি কেরলের বামপন্থী সরকার। মন্দিরে প্রবেশাধিকারের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও প্রতিরােধ গড়ে তােলে বিজেপি।

উল্লেখ্য, প্রাচীন বিশ্বাস মেনে শবরীমালায় ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। বিশ্বাস ছিল, ঋতুমতী মহিলারা মন্দিরে প্রবেশ করলে মন্দিরের প্রধান বিগ্রহ আয়াপ্পার কৌমার্যব্রত ভেঙে যাবে। এই বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গিয়ে মন্দিরে প্রবেশের অধিকার দাবি করেন মহিলারা। মানবশৃঙ্খল গড়ে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ, আন্দোলন। মামলা গড়ায় দেশের শীর্ষ আদালত পর্যন্ত।

অবসরের আগে তাঁর শেষ রায়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেছিলেন, লিঙ্গভিত্তিক যে বৈষম্য গড়ে উঠেছে শবরীমালার মন্দিরকে কেন্দ্র করে, সেটা পুরােপুরি ভিত্তিহীন। সুপ্রিম কোর্ট এই অযৌক্তিকতাকে সমর্থন করে না। সংবিধানও এই লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে। মন্দিরের নিয়ন্ত্রক ত্রিবাঙ্কুরের বােম বোর্ডও শীর্ষ আদালতের রায় মেনে নেয়। ফলে সব বয়সী মহিলারাই মন্দিরে ঢােকার প্রবেশাধিকার পেয়ে যান।

বিজেপির দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ যেন কেরল সরকার কার্যকর না করে। শবরীমালা মন্দিরে যেন কোনও ভাবেই মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া না হয়। কিন্তু প্রবল প্রতিরােধের মধ্যেও মন্দির দর্শন করেন ৫১ জন মহিলা।