কমিশনকে ইভিএম-এর কারচুপি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট 

Written by SNS April 18, 2024 5:46 pm
দিল্লি, ১৮ এপ্রিল – শুক্রবার দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে ১৮ তম লোকসভা নির্বাচন। তবে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেই ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখার মামলার শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারীদের বক্তব্য, ভিভিপ্যাটের তথ্য ও ইভিএমে পড়া ভোটের মধ্যে পার্থক্যের বহু অভিযোগ ওঠে। শীর্ষ আদালত ইভিএম প্রসঙ্গে জানায়, এটা অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। এই বক্তব্যের দুদিন পরেই কমিশনকে ইভিএম খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। অবাধ এবং স্বচ্ছ ভোটের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। ভিভিপ্যাট পদ্ধতির মাধ্যমে কাগজের স্লিপ-সহ বৈদ্যুতিন ইভিএম-এ পাওয়া ভোটের ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে একটি আবেদনের শুনানির সময় বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেয় বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। 
 
ভিভিপ্যাট-ইভিএম ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার মহড়া ভোটে বিজেপির পক্ষে অতিরিক্ত ভোট পড়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে দিল। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং দীপঙ্কর দত্তর বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনকে এই মৌখিক আদেশ দেয় । 
 
প্রসঙ্গত, ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটের ভোটার স্লিপ মিলিয়ে দেখার দাবি অনেক দিনের। ইভিএমের ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখার আর্জিতে মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিও হয়। তার মধ্যেই কেরলের কাসারগোড় কেন্দ্রের চারটি ইভিএমে ‘কারচুপি’ নিয়ে অভিযোগ ওঠে। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে ভিভিপ্যাট-ইভিএম মিলিয়ে দেখার মামলার শুনানির সময়েই এই অভিযোগ আনেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের আইনজীবী। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই অভিযোগ আনেন তিনি।
 
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাসারগোড় কেন্দ্রে ইভিএমের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখার জন্য মহড়া ভোট করা হয়। সেই সময় ধরা পড়ে, বিজেপির পক্ষে অস্বাভাবিক বেশি ভোট পড়েছে। সেই নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে কেরলের লেফট ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট ও ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট। ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখার মামলায় বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন এই অভিযোগ আনা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই সময়েই দুই বিচারপতির বেঞ্চ মৌখিকভাবে কমিশনকে নির্দেশ দেন, এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে।

 

দুই বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণে বলেছে, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়ার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। কারও মনে যেন আশঙ্কা তৈরি না হয় যে, যা উচিত তা করা হচ্ছে না।’’ প্রসঙ্গত, ইভিএমে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হল কি না, ভিভিপ্যাট স্লিপের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ রয়েছে ভোটারের। কিন্তু অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের অভিযোগ, প্রতিটি বিধানসভায় ২০০টি ভিভিপ্যাট মেশিন থাকলেও পাঁচটির বেশি গণনাই করা হয় না।
 
কিন্তু এই ব্যবস্থায় ভোটারের পছন্দের গোপনীয়তা রাখার গণতান্ত্রিক অধিকার বজায় থাকবে কি না তা নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি খান্না। আবেদনকারী পক্ষ তখন জানায়, সেই সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই।
ভিভিপ্যাট প্রিন্টারে কোনও সফ্‌টওয়্যার আছে কি না দুই বিচারপতির বেঞ্চ তা নিয়ে প্রশ্ন করলে, নির্বাচন কমিশন নেতিবাচক জবাব দেয়। কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘‘প্রতিটি ভিভিপ্যাটে একটি চার মেগাবাইটের ফ্ল্যাশ মেমরি থাকে যা প্রতীক সংরক্ষণ করে।’’ জানান, রিটার্নিং অফিসার প্রতি ভোটারের ভোটদানের আগে ইলেকট্রনিক ব্যালট প্রস্তুত করেন, যা প্রতীক লোডিং ইউনিটে লোড করা হয়। আইনজীবী মনিন্দরের কথায়, ‘‘এটি একটি সিরিয়াল নম্বর। প্রার্থীর নাম এবং প্রতীক দেবে। কিছুই আগে থেকে লোড করা হয় না। ডেটা নয়, এটি আসলে ইমেজ ফরম্যাট।’’