• facebook
  • twitter
Wednesday, 21 May, 2025

লাল কেল্লার মালিকানা দাবি মুঘল বংশধরের পুত্রবধূর 

উত্তরাধিকার সূত্রে লাল কেল্লাকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করলেন মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয়-এর প্রপৌত্র প্রয়াত মির্জা মহম্মদ বেদার বখত-এর বিধবা স্ত্রী সুলতানা। যদিও এত বছর পর লাল কেল্লাকে ঘিরে এই দাবি যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়নি আদালতের। তাই  সেই আবেদন খারিজ করেছে হাইকোর্ট। জানা গিয়েছে, মুঘলদের সম্পত্তি হিসেবে লাল কেল্লার উত্তরাধিকার চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। সেই মামলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিভু বাখরু এবং বিচারপতি তুষার রাওয়ের বেঞ্চ ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে দেয়।

উত্তরাধিকার সূত্রে লাল কেল্লাকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করলেন মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয়-এর প্রপৌত্র প্রয়াত মির্জা মহম্মদ বেদার বখত-এর বিধবা স্ত্রী সুলতানা। যদিও এত বছর পর লাল কেল্লাকে ঘিরে এই দাবি যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়নি আদালতের। তাই  সেই আবেদন খারিজ করেছে হাইকোর্ট। জানা গিয়েছে, মুঘলদের সম্পত্তি হিসেবে লাল কেল্লার উত্তরাধিকার চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। সেই মামলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিভু বাখরু এবং বিচারপতি তুষার রাওয়ের বেঞ্চ ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে দেয়। এর আগে আদালতের একক বেঞ্চ ২০২১ সালে সুলতানা বেগমের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। আড়াই বছরেরও বেশি সময় পরে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তিনি। প্রসঙ্গত,, ২০২১-এর ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বেআইনিভাবে দখল করা লাল কেল্লার মালিকানা চেয়ে আবেদন করেছিলেন বেগম।
 
সুলতানা বেগম। মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয়-এর প্রপৌত্রের পুত্রবধূ তিনি। বর্তমানে তিনি স্বামীহারা। দিল্লি হাইকোর্টে গিয়ে তিনি দাবি করে বসেছেন, লাল কেল্লা তাঁদের, তাই তাঁকে সম্পত্তির অধিকার দেওয়া হোক। আবেদনে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে সুলতানা বেগম জানান, তাঁর নিজের শারীরিক অসুস্থতা ও মেয়ের মৃত্যুর কারণে তিনি আবেদন করতে পারেননি। বেঞ্চ বলেছে, ‘আমাদের কাছে এই যুক্তি অপর্যাপ্ত বলে মনে হয়েছে।’ এর পরেই আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এর আগে ২০২১ সালে একক বেঞ্চ যখন লাল কেল্লার দখলের জন্য সুলতানা বেগমের আবেদন খারিজ করেছিল তখন আদালত জানিয়েছিল, ১৫০ বছরেরও বেশি সময় পরে আদালতে আসার কোনও যুক্তি নেই।
 
সুলতানা বেগম আবেদনে বলেছিলেন, যে তিনিই লাল কেল্লার আসল মালিক। কারণ তিনি এই সম্পত্তি তাঁর পূর্বপুরুষ বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয়-এর কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন। ভারত সরকার অবৈধভাবে এই সম্পত্তি দখল করে রেখেছে। সুলতানার আইনজীবী বিবেক মোরে জানান, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের পর ব্রিটিশরা এই পরিবারকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছিল। এর পরে সম্রাটকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল এবং  জোর করে লাল কেল্লার দখল নেওয়া হয়েছিল। আবেদনে ১৮৫৭ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সরকারের অবৈধ দখলদারির জন্য ক্ষতিপূরণ চাওয়ার পাশাপাশি আবেদনকারীকে লাল কেল্লা হস্তান্তর করার বা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশের আবেদন জানানো হয়েছিল। উল্লেখ্য, বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয় ১৮৬২ সালের ১১ নভেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান।
 
মহিলা আবেদনে আরও জানিয়েছেন, ১৯৬০ সালে জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়, সরকার মির্জা মুহাম্মদ বেদার বখতকে বাহাদুর শাহের উত্তরাধিকারী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তার তথ্যও তিনি আদালতে পেশ করেন।
 
একসময় দিল্লিতে ছিল মুঘল সম্রাটদের রাজত্ব। বংশ পরম্পরায় শাসন করে গিয়েছেন মুঘল রাজারা। মুঘল আমলের স্মারক বহু স্থাপত্য ও শৌধ আজও রয়ে গেছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় বয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ সেই মুঘল বংশধরদের কেউ এসে সম্পত্তির দাবি জানাবেন তা অপ্রত্যাশিত ও অভাবনীয় ছিল।বিশেষ করে আবার লাল কেল্লার মতো এক শৌধ, যার সামনে দাঁড়িয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে বক্তব্য রেখে থাকেন। এবার সেই শৌধই দাবি করে বসলেন এক মহিলা।