এসআইআর বা নিবিড় সংশোধন তালিকা (বিশেষ তীব্র পুনরায় পর্যালোচনা) প্রকাশের সময়সীমা নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিতর্কের মাঝেই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করল সুপ্রিম কোর্ট। বাংলা, তামিলনাড়ু, কেরল-সহ একাধিক রাজ্যের অভিযোগ— তাড়াহুড়ো করে খসড়া তালিকা প্রকাশের চাপে বিধ্বস্ত বিএলওরা; একাধিক রাজ্যে ঘটছে অস্বাভাবিক মৃত্যু। তাঁদের এই উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘পরিস্থিতি যদি এতটাই সংকটজনক হয়, তাহলে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বাড়ানোর নির্দেশ দিতেও আমরা বাধ্য হতে পারি।’
বুধবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের এজলাসে মামলার শুনানিতে উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিএলওদের উপর তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক চাপের প্রসঙ্গ। আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ আদালতকে জানান, এসআইআর-এর কাজের জন্য দেওয়া সময়সীমা অত্যন্ত কম। ফলে বিএলওদের উপর ‘অসংগতিপূর্ণ’ চাপ তৈরি হয়েছে। বাংলায় একাধিক বিএলও কাজের চাপে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
Advertisement
এই বক্তব্য শোনার পর কমিশনকে কার্যত সতর্ক করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যদি বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা না করে তাড়াহুড়ো করা হয়, তাহলে আদালতকে কড়া পদক্ষেপ করতেই হবে। প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানোর নির্দেশ দেব।’ আদালতের এই মন্তব্যে আপাতত স্বস্তিতে ন্যায্যতা চাওয়া রাজ্যগুলি।
Advertisement
উল্লেখ্য, বাংলা, তামিলনাড়ু, কেরল, সিপিএম-সহ বেশ কয়েকটি দল ইতিমধ্যেই এসআইআর প্রক্রিয়া ও তার সময়সীমার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। তাঁদের অভিযোগ, কেন্দ্র সময়সীমা অত্যন্ত কম রেখেছে। ফলে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের উপর চাপ অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে, যা জীবনহানির ঝুঁকিও তৈরি করছে।
বুধবারের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বাংলা সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেন। তামিলনাড়ুর মামলাগুলির তারিখ স্থির হয় ৪ ডিসেম্বর। পাশাপাশি বিচারপতি সূর্য কান্ত স্পষ্ট মন্তব্য করেন— ‘যদি মামলাকারীরা প্রয়োজনীয়তা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, আদালত খসড়া তালিকা প্রকাশের সময়সীমা পিছিয়ে দিতেই পারে।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য নির্বাচন কমিশনকে সময়সীমা পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করতে পারে। এসআইআর নিয়ে চলতে থাকা জাতীয় বিতর্কে এটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Advertisement



