• facebook
  • twitter
Monday, 28 July, 2025

দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত? মহাকাশ স্টেশনে কীভাবে ঘুমান, পড়ুয়াদের সব প্রশ্নের জবাব দিলেন শুভাংশু

পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণের মধ্যে আমরা বড় হয়েছি। কিন্তু মহাকাশে তা নেই। এখানে শরীরে অনেক রকমের পরিবর্তন হয়। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে।

ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এ যাওয়ার পর অনেক সৌরজগতের অনেক অদ্ভুত ঘটনা চাক্ষুষ করেছেন। সেই সব অজানা ঘটনা পড়ুয়াদের মধ্যে শেয়ারও করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মহাকাশ স্টেশনে সারাদিনে ১৬ বার সূর্য ওঠে এবং ১৬ বার অস্ত যায়। একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এই অদ্ভূত তথ্য তিনি পড়ুয়াদের জানাতেই তাঁদের কৌতূহল আরও বেড়ে যায়। দেখা দেয় নানা প্রশ্ন। সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শুভাংশু। তিনি ভারতীয় পড়ুয়াদের মহাকাশ নিয়ে আরও বেশি করে স্বপ্ন দেখারও পরামর্শ দিয়েছেন।

জানা গিয়েছে, ইসরোর উত্তর পূর্ব স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (এনইএসএসি) একটি কর্মসূচির আয়োজন করে। সেখানে পড়ুয়াদের সঙ্গে আইএসএস থেকে কথা বলেন শুভাংশু। তাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। কীভাবে তিনি মহাকাশে খাচ্ছেন, ঘুমোচ্ছেন, সে সব প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন। এত বার সূর্যোদয় হয়, তার মধ্যে কীভাবে ঘুমোন, তার জবাবও দিয়েছেন শুভাংশু। তিনি বলেন, ‘আমরা মহাকাশ স্টেশনে এক দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় এবং ১৬ বার সূর্যাস্ত দেখি। কারণ, আমরা প্রতি ৯০ মিনিটে পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করি। সূর্যের আলো অনুসরণ করে আমরা কাজ করি না, গ্রিনিচ সময় (ভারতীয় সময় থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা পিছিয়ে) ধরে কাজ করি।’

পড়ুয়াদের প্রশ্ন, সারাদিনে যদি এতবার সূর্যোদয় হয়, তাহলে তিনি ঘুমান কীভাবে? এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে মঙ্গলবার পড়ুয়াদের জানিয়েছেন যে, সূর্য ধরে মহাকাশচারীরা চলেন না। চলেন গ্রিনিচ সময় ধরে।

এরপর ফের প্রশ্নবাণ আসে, মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ নেই, সেই পরিস্থিতিতে কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা? এ বিষয়ে শুভাংশু ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘পৃথিবীতে মাধ্যাকর্ষণের মধ্যে আমরা বড় হয়েছি। কিন্তু মহাকাশে তা নেই। এখানে শরীরে অনেক রকমের পরিবর্তন হয়। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। প্রথমে স্পেস সিকনেস বা একটা অস্বস্তি হয়। তার জন্য ওষুধ রয়েছে। আমরা দ্রুত সেই পরিস্থিতি মানিয়ে নিয়েছি।’ এই নিয়ে পৃথিবীতেই যে তাঁদের আগে থেকে প্রশিক্ষণ হয়েছিল, সে কথাও জানিয়েছেন শুভাংশু।

তিনি জানিয়েছেন, মহাকাশে শরীরকে সুস্থ রাখার বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেন মহাকাশচারীরা। তিনি বলেন, ‘শূন্য মাধ্যাকর্ষণের জেরে পেশী ও হাড়ের ক্ষয় হয়। এই অভিযান সেরে পৃথিবীতে ফেরা পর্যন্ত সুস্থ থাকা খুব জরুরি। সেজন্য আমরা রোজ ট্রেডমিল, সাইকেল, স্টেংথ প্রশিক্ষণ যন্ত্রে শরীরচর্চা করি।’ শুভাংশু জানিয়েছেন, কিছু কাজের ক্ষেত্রে সুবিধার জন্য মহাকাশে রোবট-বাহুও ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে এইসব প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।