অভিনয় জগৎ থেকে হঠাৎই উধাও অভিনেত্রী

চেন্নাই: এখন তাঁর পরিচয় প্রাক্তন অভিনেত্রী৷ তবে একসময় তাঁকে দেখে ভক্তদের ঢল নামত৷ তিনি রম্ভা৷ নব্বইয়ের দশকে মাত করেছিলেন বড় পর্দা৷ তাঁর রূপের ছটায় ঘায়েল হয়েছিল হাজার-হাজার পুরুষ হূদয়৷ অপরূপা সুন্দরী এই অভিনেত্রী অন্ধ্রপ্রদেশের মেয়ে৷ তেলুগু পরিবারে জন্ম৷ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ আসে৷ তাঁকে নায়িকা হিসেবে কাস্ট করা হয় মালায়াম ছবি ‘সরগম’-এ৷ প্রথমে অম্রুতা নামে অভিনয় করেছিলেন৷ সেটাই ছিল তাঁর স্ক্রিন নেম৷ তারপর সেই নাম পাল্টে হয় রম্ভা৷
রম্ভার জন্ম ১৯৭৬ সালের ৫ জুন৷ পরিবার প্রদত্ত নাম ছিল বিজয়লক্ষ্মী ইয়েদি৷ সিনেমাপাড়ায় এসেই নাম পাল্টে হয় ‘স্বর্গের’ রম্বা৷ ১৫ বছর বয়সে লেখাপড়া বরাবরের মতো ছেডে় কেবলই বড়পর্দার অভিনয়ে মন দিয়েছিলেন রম্ভা৷ একে-একে হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, মালায়ালাম, ভোজপুরী, এমনকী ইংরেজি ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় রম্ভাকে৷ মোট ৮টি ভাষায় তৈরি ১০০টি ছবিতে কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী৷ এমন কোন বড় মাপের অভিনেতা নেই যাদের বিপরীতে তিনি কাজ করেন নি৷ চিরঞ্জীবী থেকে শুরু করে মিঠুন চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সকলের নায়িকা হিসেবেই অভিনয় করেছিলেন৷
কিন্ত্ত রাতারাতি তিনি হারিয়ে যান৷ বা বলা ভাল গায়েব হয়ে যান সিনেমা জগত থেকে৷ পরে জানা যায় ব্যক্তিজীবনের ওঠাপড়াতেই তিনি হারিয়ে যান সিলভারস্ক্রন থেকে৷ উল্লেখ্য, কানাডায় বসবাসকারী এক শ্রীলঙ্কার বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছিলেন রম্ভা৷ সেই ব্যক্তির নাম ইন্দ্রকুমার পাথমনাথন৷ ইন্দ্রকুমারকে ভালবেসে বিয়ে করে কেরিয়ারের এক্কেবারে সেরা সময়ে সব ছেডে়ছুডে় কানাডায় চলে গিয়েছিলেন রম্ভা৷ সেখানে গিয়েই তিনি বাস্তবটা বুঝতে পারেন৷ অল্প কয়েকদিন ইন্দ্রকুমারের সঙ্গে সংসার করেই রম্ভা জানতে পারেন স্বামীর জীবনের গোপন সত্য৷ বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন৷ বিয়ের আগে ইন্দ্রকুমার রম্ভাকে বলেননি যে, তিনি আগে থেকে বিবাহিত৷ তাঁর আরও একজন স্ত্রী রয়েছেন৷ এই সত্যির সম্মুখীন হয়ে রম্ভা ভেঙে পডে়ছিলেন৷ দেশ, পরিবার, এমনকী সাজানো কেরিয়ার ছেডে় এক প্রতারকের পাল্লায় পডে়ছেন দেখে হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন রম্ভা৷ পালিয়ে এসেছিলেন সংসার ছেডে়৷ প্রতারক স্বামীর সংসারে আর ফিরবেন না৷ ধনুক ভাঙা পণ করেছিলেন রম্ভা৷ কিন্ত্ত ইন্দ্রকুমার ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন রম্ভাকে৷ বহু তর্কাতর্কির মধ্যে রম্ভা শর্ত দিয়েছিলেন, প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতেই হবে৷ নচেৎ তিনি ইন্দ্রকুমারের জীবনে ফিরবেন না৷ রম্ভার কথা মতোই চলেন ইন্দ্রকুমার৷ প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে ফের রম্ভার সঙ্গে সংসার শুরু করেন তিনি৷ সেই সংসার আরও বড় হয় পরবর্তী সময়ে৷ দুই কন্যা এবং এক পুত্রর জন্ম হয় তাঁদের৷ বর্তমানে ৪৭ বছর বয়সি রম্ভা সিনেমায় আর ফিরে আসেননি৷ তাঁকে মাঝে মধ্যে দেখা যায় রিয়্যালিটি শোয়ের মঞ্চে বিচারকের আসনে৷