৩২০০ কোটি টাকার আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হলেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সাংসদ পিবি মিধুন রেড্ডি। শনিবার ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাজ্য সরকারের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডি ঘনিষ্ঠ এই সাংসদের আগাম জামিনের আবেদন এর আগেই খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট।
তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, জগন রেড্ডি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন যে নতুন আবগারি নীতি চালু করা হয়, তার আড়ালে চালানো হয় বিপুল অর্থের দুর্নীতি। অভিযোগ, মদ প্রস্তুতকারী একাধিক সংস্থা থেকে বিপুল ঘুষ নেওয়া হয় এবং তাদের বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়। সেই অর্থ বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে লেনদেন করে সাদা করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, কিছু নকল ও নতুন মদ প্রস্তুতকারী সংস্থাকে বাজারে পণ্য বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এই সমস্ত সংস্থা ও তাদের আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিল ওয়াইএসআর কংগ্রেস নেতাদের ঘনিষ্ঠ কিছু প্রতিষ্ঠান।
আবগারি দুর্নীতি মামলার সূত্রপাত ওয়াই ভেঙ্কটেশ নামক এক ব্যক্তির দায়ের করা অভিযোগ থেকে। অন্ধ্রে সরকার পরিবর্তনের পর বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু এই মামলার তদন্তে সিট গঠন করেন। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ধনঞ্জয় রেড্ডি, কৃষ্ণমোহন রেড্ডি ও বালাজি গোপিন্দপ্পা নামে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিট। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই শনিবার মিধুন রেড্ডিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, সাংসদ মিধুন রেড্ডির জিজ্ঞাসাবাদ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে, যার ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছে বিরোধী ওয়াইএসআর কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র মলাডি বিষ্ণু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডির ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা রুজু করে তাঁদের হেনস্থা করছেন। এই ষড়যন্ত্র আমরা খুব শীঘ্রই জনসমক্ষে আনব।’ এদিকে আফগারি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার তদন্ত আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে সিট।
আবগারি কেলেঙ্কারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মিধুন সহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিট। তাঁদের মধ্যে অন্যতম – পূর্বতন ওয়াইএসআর সরকারের আইটি উপদেষ্টা কাসিরেড্ডি রাজাশেখর রেড্ডি, স্পাই ইন্ড্রাসটিজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সজ্জলা শ্রীধর রেড্ডি, রাজাশেখর রেড্ডির আপ্তসহায়ক পি দিলীপ, বি চাণক্য, ভারতী সিমেন্ট ডিরেক্টর গোবিন্দপ্পা বালাজি।