• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

বিহারে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই প্রার্থী দিল আরজেডি! ফাটল না কি বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই?

সোমবার আরজেডি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪৩টি বিধানসভা আসনের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে

বিহারে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র ভেতরে শুরু হয়েছে প্রবল টানাপোড়েন। এখনও পর্যন্ত জোটের তরফে আসনরফা চূড়ান্ত হয়নি, অথচ তার আগেই জোটসঙ্গী দলগুলির মধ্যে প্রকাশ্যে দেখা দিয়েছে মতভেদ। একদিকে কংগ্রেস একের পর এক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করছে, অন্যদিকে তেজস্বী যাদবের দল রাজদ (আরজেডি) ঘোষণা করেছে তাদের প্রার্থিতালিকা— এবং সেই তালিকায় রয়েছে এমন কয়েকটি আসন, যেখানে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন জোটসঙ্গী কংগ্রেসের প্রার্থীরাই।
সোমবার আরজেডি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪৩টি বিধানসভা আসনের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকা প্রকাশ হতেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন— তবে কি ইন্ডিয়া জোটে ফাটল? কারণ, একাধিক আসনে আরজেডির প্রতিদ্বন্দ্বী এখন তাদেরই জোটসঙ্গী কংগ্রেস।
সবচেয়ে আলোচিত আসন লালগঞ্জ। এই আসনে কংগ্রেস ইতিমধ্যেই আদিত্যকুমার রাজাকে প্রার্থী করেছে। কিন্তু আরজেডি একই আসনে মনোনয়ন দিয়েছে শিবানী শুল্কাকে। আবার কাহালগাঁও আসনে, যা কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের ঘাঁটি, সেখানেও জোটের দুই শরিক মুখোমুখি— কংগ্রেসের প্রার্থী সদানন্দ সিংহ, আরজেডির রাজনীশ ভারতী। একই অবস্থা বৈশালী আসনেও— কংগ্রেস দিয়েছে সঞ্জীব কুমারকে, আরজেডি দিয়েছে অশোককুমার কুশওয়াহাকে।
শুধু কংগ্রেস নয়, জোটের অন্য দুই সঙ্গী সিপিআই এবং বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-ও নিজেদের মতো করে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ফলত, তারাপুর, বাচওয়ারা-সহ একাধিক আসনে দেখা দিয়েছে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা, যা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
এদিকে বিহারের রাঘোপুর আসন থেকে ইতিমধ্যেই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তেজস্বী যাদব। প্রথম দফার ভোট এই আসনেই। রাঘোপুর-সহ ১৪৩টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে আরজেডি কার্যত নির্বাচনী লড়াইয়ের মাঠে নেমে পড়েছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেসও বসে থাকেনি। গত বুধবার থেকেই তারা নিজেদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে শুরু করে। একে একে বিভিন্ন আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার তারা প্রকাশ করে ৪৮ জন প্রার্থীর তালিকা, পরের ধাপে আরও ১২ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। ফলে, এখনও আসন সমঝোতা না হলেও কার্যত ময়দানে নেমে পড়েছে দুই শরিকই।
এই পরিস্থিতিতে জোটের ভেতরে অসন্তোষ তীব্র হচ্ছে। বিহার কংগ্রেসের প্রধান রাজেশ রাম অভিযোগ তুলেছেন, “আলোচনা শেষ হওয়ার আগেই প্রার্থী ঘোষণা করা জোটবিরোধী কাজ।”
তবে আরজেডির তরফে জানানো হয়েছে, তারা এখনও জোটের ঐক্য অটুট রাখতে চায়। আরজেডি নেতৃত্বের দাবি, কংগ্রেসের তরফে আলোচনা দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করতে হয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তেজস্বী যাদব ও কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে এই দূরত্ব যদি দ্রুত না মেটে, তাহলে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ঐক্য প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। আসনরফার জট না খুললে, বিহারের ভোটযুদ্ধ ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ থেকে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রূপ নিতে সময় লাগবে না বলেই আশঙ্কা অনেকের।

Advertisement

Advertisement