একটানা প্রবল বর্ষণে লাগাতার বেহাল পরিস্থিতি উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকার। একদিকে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস, অন্যদিকে বন্যা পরিস্থিতির জেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় উদ্ধারকাজে নামতে হয়েছে ভারতের বায়ুসেনা এবং অসম রাইফেলসের আধিকারিকদেরও। বহু বছরের রেকর্ড ভেঙে শুধু অসমের শিলচরেই গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৪১৫.৮ মিমি। ১৮৯৩ সালের পর একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। অসম, মেঘালয়, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম এবং সিকিম মিলিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে গত ২ দিনে মোট ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে মেঘালয়ে। গত ২৮ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৫ দিনে মেঘালয় জুড়ে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। চেরাপুঞ্জি ও মৌসিনরামে বৃষ্টিপাত হয়েছে যথাক্রমে ৭৯৬ মিমি এবং ৭৭৪.৫ মিমি। মেঘালয়ে হড়পা বানে বিপর্যস্ত ১০টি জেলা। ত্রিপুরায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
Advertisement
মণিপুরে ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মণিপুরের সমতল এলাকার ২টি জেলা ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিম। এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যের দেড়হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে এনেছে সেনা। অরুণাচল প্রদেশে ভূমিধসে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে পূর্ব কামেং জেলায় এবং ২ জনের মৃত্যু হয়েছে জ়িরো ভ্যালিতে। ভারী বৃষ্টি এবং ভূমিধসের জেরে উত্তর সিকিমে আটকে পড়েছেন ১হাজার ২০০ পর্যটক।
Advertisement
গত ২৯ মে তিস্তা নদীতে পড়ে গিয়েছিল পর্যটকবোঝাই একটি গাড়ি। গাড়িতে ছিলেন ১১ জন পর্যটক। তার মধ্যে আট জনের খোঁজ মেলেনি। ত্রিপুরাতেও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
একই পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমে। অবিরাম বৃষ্টি ও ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। লাচেনে ১১৫ জন, লাচুংয়ে ১ হাজার ৩৫০ জন, পর্যটক আটকে রয়েছেন। ধসের কারণে উত্তর সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত । জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাচুং থেকে পর্যটকদের নিচে নামিয়ে আনা হচ্ছে।
অসমের ১৯টি জেলার ৭৬৪টি গ্রামে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অসমের কাছাড় জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। ভূমি জেলায় ৮৩ হাজার, নগাঁও জেলায় ৬২ হাজার, লখিমপুর জেলায় ৪৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানিয়েছে অসম প্রশাসন।
Advertisement



