গগৈ’র মনোনয়নে দেশের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা প্রশ্নের মুখে দাড়িয়ে : লোকুর

দেশের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ শাসক দল ঘনিষ্ট, দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ’কে সংসদের উচ্চকক্ষে মনোনীত করেন।

Written by SNS New Delhi | March 18, 2020 1:03 pm

প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ (File Photo: IANS)

সম্মানজনক উপঢৌকন। মোদি ঘনিষ্ঠ দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হল। যদিও গগৈ বলেছেন, ‘কেন আমি রাজ্যসভার মনোনয়নের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি, সে বিষয়ে শপথ গ্রহণ করার পর জানাব।’
তাঁর সহকর্মী প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর সংসদের উচ্চকক্ষে গগৈ’র মনোনয়ন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানান, ‘বিচারপতি গগৈ’কে যে সান্মাকি কোনও পদ দেওয়া হতে পারে তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। ফলে তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করার খবর মোটেই আশ্চর্যের ব্যাপার নয়। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, খুব তাড়াতাড়ি গগৈ’কে সাম্মানিক পদে বসানো হল। এরপর শুধু এটা বলা যায়, দেশের বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা, নিরপেক্ষতা, অখন্ডতার সংজ্ঞা প্রশ্নের মুখে দাড়িয়ে। শেষ দুর্গটারও পতন ঘটল আর কি?’
দেশের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ শাসক দল ঘনিষ্ট, দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ’কে সংসদের উচ্চকক্ষে মনোনীত করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সম্ভবত, আগামিকাল আমি দিল্লি যাব। আগে শপথ গ্রহণ করতে দিন, তারই আমি বিস্তারিতভাবে জানাব কেন আমি মনোনয়নের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি।’ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে ১৩ মাস দায়িত্ব পালন করার পর গত বছর নভেম্বরে প্রধান বিচারপতি গগৈ অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৮ সাল, জানুয়ারি মাসে দেশের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন বিচারপতি গগৈ, লোকুর, জে চেলামেশ্বর ও কুরিয়র জোসেফ। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র তাঁর পছন্দের বিচারপতিদের এজলাসে বাছাই করা মামলাগুলি নিষ্পত্তির জন্য পাঠান। আর স্পর্শকাতর মামলাগুলি জুনিয়র বিচারপতিদের নিষ্পত্তি করার জন্য পাঠান।
দেশের সংসদের উচ্চকক্ষে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি’কে কোনওদিন সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়নি। উচ্চকক্ষে মূলত সেলিব্রেটি ও শিল্পীদের আধিপত্য দেখা গেছে। তবে কয়েক দশক আগে দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঙ্গনাথ মিশ্র কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯৮ সালে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে কোনও দলের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়ে সাংসদ হয়েছিলেন। তিনি ২০০৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। দেশের আরেক প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমকে মোদি প্রশাসন কেরলের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করেছিল।
বিচারপতি হিসেবে গগৈ অযোধ্যা মামলার সাংবিধানিক বেঞ্চের প্রধান ছিলেন। পাশাপাশি তিনি রাফায়েল জেট ক্রয়ের চুক্তি নিয়ে চলা বিতর্কে সরকার পক্ষকে তিনি ক্লিনচিট দিয়েছিলেন। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলা হলেও শীর্ষ কোর্টের তিন সদস্যের প্যানেল তাঁকে ছাড়পত্র দিয়েছিল।