প্যারিস– অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর রাফাল যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানোর দাবি করেছিল পাকিস্তান। তিনটি রাফাল ফাইটার জেট ধ্বংস করা নিয়ে পাকিস্তানের সেই দাবি নস্যাৎ করল রাফালের নির্মাতা সংস্থা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন। ফরাসি পত্রিকাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সংস্থার সিইও এরিক ট্রাপিয়ার জানান, ভারতের তিনটি রাফালে ধ্বংস করার যে দাবি পাকিস্তানের তরফে করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ‘ভুল’। ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহানও একই কথা বলেছিলেন। ভারতের সেই দাবিকেই সমর্থন করল ফ্রান্স। এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ফের একবার মুখ পুড়ল পাকিস্তানের।
রাফালের দক্ষতা, নির্ভুল নিশানা করার ক্ষমতা এবং যুদ্ধক্ষেত্রে পারদর্শিতা নিয়েও প্রশংসা শোনা গিয়েছে ফাইটার জেটটির নির্মাতা সংস্থা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশশের সিইওর মুখে। এরিক ট্র্যাপিয়ার বলেন, ‘রাফালের শক্তি চমকে দেওয়ার মতো। অপারেশন সিঁদুরের সময়ে ভারতের রাফাল বিমান নাকি ধবংস করেছে পাকবাহিনী, পাকিস্তান এই মিথ্যাপ্রচার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি, তাই প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে, আমরা জানি না। আমারা শুধু এটুকু জানি, পাকিস্তানের প্রচারটি সঠিক নয়।’
২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর অপারেশন সিঁদুর শুরু করে ভারতীয় সেনা। সেই অভিযানে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। সেই সময় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মহম্মদ আসিফ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের কথা। এর মধ্যে তিনটি রাফাল ফাইটার জেট রয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। সেই দাবিই এদিন নস্যাৎ করেছে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের সর্বময় কর্তা।
রাফাল প্রসঙ্গে এরিক বলেন, ‘আমেরিকার তৈরি এফ-২২ যুদ্ধবিমান রাফালকে কিছুটা চ্যালেঞ্জ দিতে পারবে। কিন্তু আমেরিকার এফ-৩৫ ফাইটার জেট এবং চিনের যে কোনও যুদ্ধবিমানকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাফালের আছে। এটি আকাশপথেই শত্রুকে রুখে দিতে সক্ষম। এমনকী পারমাণবিক বোমা পরিবহনেও সক্ষম।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির পর অপারেশন সিঁদুর ছিল প্রথম বড় রাফাল নেতৃত্বাধীন অভিযান। ভারতীয় বিমান বাহিনী নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত আনতে সক্ষম হয়েছিল রাফালে যুদ্ধ বিমানের সাহায্যে। ২০১৯ সালে সামরিক ও বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী ফরাসি প্রতিষ্ঠান ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের চুক্তি করে ভারত। ওই চুক্তির ফলে ভারতের বিমান বহরে রাফাল যুদ্ধবিমান যুক্ত হয়।