শুভম বসু– কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বৃহস্পতিবার কলকাতা ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে ‘নেক্সট জেনারেশন জিএসটি রিফর্মস’ শীর্ষক আলোচনায় জিএসটির নতুন সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, যদিও বলা হচ্ছে এই জিএসটি সংস্কারটি দীপাবলির উপহার। কিন্তু এটি আসলে দূর্গা পূজোর কথা মাথায় রেখেও করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় তিনি জানান, স্বাধীন ভারতে এই প্রথম বার কোনও কর সংস্কার স্পর্শ করবে ১৪০ কোটি দেশবাসীকে। জিএসটি সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সাফল্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তাঁর কথায়, ‘মধ্যবিত্তরা জিএসটি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন, কৃষকরাও উপকার পাচ্ছেন। ছোট টিভি কেনার সময় করের চাপ অনেকটাই কম, আর বড় টিভি কিনলে করের হার তুলনামূলক বেশি। এখন অনেক ক্ষেত্রে আমরা করের বোঝা হালকা করেছি।’ পপকর্ন, নিমকি, চকলেটের মতো স্ন্যাক্সে করের হার কমানো হয়েছে। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে জিএসটি মকুব করা হয়েছে, বাকি মাত্র ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে জিএসটি দিতে হবে।
Advertisement
গাড়ি থেকে অটোমোবাইল, আবাসন, মশলা, শ্যাম্পু, সাবান—সব ক্ষেত্রেই করের হার কমানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি। দুধ, পনির, দই সহ দুগ্ধজাত পণ্যগুলি শূন্য-কর বিভাগের অধীনে অথবা সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ স্ল্যাবের আওতায় পড়েছে। মশলা সামগ্রীর উপর কর ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। শ্যাম্পু ও সাবানের উপর কর ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে পেন্সিল, নোটবুকের মতো সামগ্রী সম্পূর্ণ করমুক্ত করা হয়েছে। সৌরশক্তি সংক্রান্ত সরঞ্জামে জিএসটি ১২ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
Advertisement
জিএসটি কাঠামোর সংস্কারের ফলে বাংলা বিভিন্ন হস্তশিল্প এবং কৃষিজ পণ্যের ক্ষেত্রে লাভবান হবে বলে জানিয়েছেন নির্মলা। সেই তালিকায় রয়েছে, শান্তিনিকেতন লেবেল্ড হস্তশিল্প, বাঁকুড়া পাঁচমুড়া টেরাকোটা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মাদুর, বীরভূম-মুর্শিদাবাদের নকশি কাঁথা, পুরুলিয়ার ছৌ মুখোশ, দক্ষিণ দিনাজপুরের কাঠের মুখোশ, শোলার হস্তশিল্প, মালদা-মুর্শিদাবাদের আম এবং দার্জিলিঙের চা। এ ছাড়া, হাওড়া-হুগলি-উত্তর ২৪ পরগনার পাটশিল্পও জিএসটি ছাড়ের সুবিধা পাবে।
নির্মলা সীতারমন আরও জানিয়েছেন, জিএসটি সাধারণ মানুষের জীবন সহজ করেছে। বহু সেক্টরে করের হার কমে গিয়েছে। আবাসন থেকে শুরু করে গ্রামীণ অর্থনীতির নানা ক্ষেত্রে জিএসটি সংস্কার ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিল্পমহলের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, নতুন কর হার ব্যবসায় গতি আনবে এবং পুজোর মরসুমে ক্রেতাদের আস্থা বাড়াবে।
Advertisement



