• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

পাঞ্জাবে মা-ছেলে মিলে বেচে দিল ব্রিটিশ আমলের একটি আস্ত বায়ুসেনা ঘাঁটি

১৯৯৭ সালে এই জমির যে বিক্রয় দলিল বানানো হয়েছিল, তাতে জমির মালিক হিসেবে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকলেও  বায়ুসেনার কাছে কোনও খবর ছিল না।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

আজব কাণ্ড পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে। মা-ছেলে মিলে বেঁচে দিল একটি আস্ত বায়ুসেনা ঘাঁটি। অভিযোগ, ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারি নথি জাল করে এই বিমান ঘাঁটি বিক্রি করে দেন উষা আনসাল ও তাঁর পুত্র নবীন চাঁদ। সেনার এই বিপুল সম্পত্তি বিক্রির অভিযোগে প্রতারক মা ও ছেলের বিরুদ্ধে গত ২০ জুন একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। ফিরোজপুরের পাক সীমান্তবর্তী ফুট্টুওয়াল গ্রামে অবস্থিত ওই বায়ুসেনা ঘাঁটির জমি বিক্রির অভিযোগে শুরু হয়েছে তদন্ত।

সম্প্রতি পাঞ্জাবের দুর্নীতি দমন শাখার প্রধানকে এই মামলার তদন্তভার দিয়েছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট। ইতিমধ্যে পাঞ্জাবের করণ শর্মার নেতৃত্বাধীন একটি দল অপরাধীদের খোঁজ শুরু করেছে।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতি দমন শাখা জানিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ ব্রিটিশ সরকার এই জমি কিনেছিল। স্বাধীনতার পর জমিটি ভারতীয় বায়ুসেনার অধীনে চলে আসে। তিনটি যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল এই ভারতীয় বিমান ঘাঁটি। ১৯৬২ সালে ভারত-পাক, ১৯৬৫ সালে ইন্দো-চিন ও ১৯৭১ সালে ভারত-পাক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল  এই বায়ুসেনা ঘাঁটি। কিন্তু সেনার চোখে ধুলো দিয়ে সেই সরকারি সম্পত্তি নিজেদের নামে করেন উষা ও তাঁর পুত্র নবীন। পরে তারা আবার এই জমি বিক্রি করে দেয়। ১৯৯৭ সালে এই কাণ্ড ঘটলেও এতদিন প্রশাসনের নজরে আসেনি। অবশেষে ২৮ বছর পর বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে।

Advertisement

যদিও অন্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিষয়টি অনেক আগেই সরকারের নজরে এসেছিল। এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন  রাজস্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী নিশান সিং। তিনি ফিরোজপুরের ডেপুটি কমিশনারকে ২০২১ সালে বিষয়টির তদন্তের জন্য বলেন। কিন্তু  সরকারের পক্ষ থেকে কোনও গুরুত্ব না দেওয়ায় হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন নিশান।

জানা গিয়েছে, ১৯৯৭ সালে এই জমির যে বিক্রয় দলিল বানানো হয়েছিল, তাতে জমির মালিক হিসেবে একাধিক ব্যক্তির নাম থাকলেও  বায়ুসেনার কাছে কোনও খবর ছিল না। এই ঘটনাকে যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে হাই কোর্ট। উচ্চ আদালত জানিয়েছে, এই ধরনের ঘটনা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। বিচারক ফিরোজপুরের ডেপুটি কমিশনারকেও ভর্ৎসনা করেছেন।  তিনি আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement