কার্গিল দিবসে মোদির নিশানায় পাকিস্তান

রবিবার ছিল প্রধানমন্ত্রীর ৬৭ তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান। এই দিনেই ১৯৯৯ সালে ভারত কার্গিল যুদ্ধে জয় পেয়েছিল।

Written by SNS New Delhi | July 27, 2020 9:00 am

কার্গিল যুদ্ধ (Photo: Twitter/@sachin_rt)

দুষ্টের কাজ হল অকারণে শত্রুতা করা। এভাবেই কার্গিল দিবসে পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার ছিল প্রধানমন্ত্রীর ৬৭ তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান। এই দিনেই ১৯৯৯ সালে ভারত কার্গিল যুদ্ধে জয় পেয়েছিল। ২১ তম কার্গিল দিবসে সেই যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে এনেই প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানকে আক্রমণ করলেন।

কোন পরিস্থিতির মধ্যে কার্গিল যুদ্ধ হয়েছিল তা ভারতবর্ষ এবং দেশের মানুষ কখনও ভুলবে না বলেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। পাকিস্তান চেয়েছিল ভারতের জমি দখল করতে। নিজেদের দেশের অন্তর্দ্বন্দ্ব ঢাকতে এই কৌশল নিয়েছিল পাকিস্তান। ভারতীয় সেনাও তার যোগ্য জবাব দিয়েছিল।

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত ভালো সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছিল। কিন্তু যারা দুষ্টু হয় তাদের স্বভাব এমনই থাকে। কোনও কারণ ছাড়াই শত্রুতা করে। তারা উপকারির ক্ষতিরও কথা ভাবে। সেজন্যই ভারতের বন্ধুত্বের জবাবে পাকিস্তান পিঠে ছোরা মেরেছিল। এমনই মন্তব্য করে এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের এই ছোরার জবাব ভারতীয় সেনা কি বীরত্ব দিয়ে দিয়েছিল তা মনে রাখবে গোটা দেশ। গোটা দুনিয়া দেখেছিল সেই জবাব। ২১ বছর আগে ভারতীয় সেনা কার্গিলের চুড়ায় ত্রিবর্ণ পতাকা উড়িয়েছিল। ওই লড়াই উঁচু পাহাড়ের জন্য ছিল না। ভারতীয় জওয়ানদের উঁচু লক্ষ্য ও সাচ্চা বীরত্বের লড়াই ছিল। আমার কার্গিল যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। সেখানে গিয়ে জওয়ানদের বীরত্ব দেখেছি। আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনার মধ্যে ওই দিনটা ছিল অন্যতম।’

এদিন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে স্মরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লালকেল্লা থেকে সেদিন যে ডাক অটলজি দিয়েছিলেন, তা আজও প্রাসঙ্গিক। সেই সময় দেশকে মহাত্মা গান্ধির একটি মন্ত্র স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন অটলজি। গান্ধিজি বলেছিলেন, ‘যদি কেউ কি করা উচিত আর কি করা উচিত নয়, তা নিয়ে ভাবেন। তবে তার উচিত সবার আগে গরিব ও অসহায় ব্যক্তির কথা ভাবা। ভাবা উচিত তাতে তার ভালো হবে কিনা।’

গান্ধির এই মন্ত্রকে সামনে রেখে মোদি বলেন অটলজি এটা বলেছিলেন, কারণ এটা একটা ভাবনা ছিল। অটলবিহারী বাজপেয়ী সেই ভানার সঙ্গে মন্ত্রের যোগসূত্রের মেলবন্ধন তৈরি করেছিলেন। বলেছিলেন, কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবা উচিত এই পদক্ষেপ সঠিক হবে কিনা।

এই পদক্ষেপ কি সৈনিকদের সম্মান জানাতে পারবে, যারা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিজেদের জীবন দিয়েছিলেন? কার্গিল যুদ্ধের জন্য পাকিস্তানকে নিশানা করে এবং নিন্দা করে সেই সঙ্গে কার্গিলের ভারতীয় বীর জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বীর যোদ্ধাদের গল্প সবাইকে জানতে হবে। তাহলে কঠিন সময়ে সাহস বাড়বে। যারা দেশের জন্য প্রাণ বলি দিয়েছেন, তাঁদের দিকে সবসময় সরকারের নজর থাকবে।’

এদিন ভারতীয় সেনার বীর সন্তানদের টুইটারে শ্রদ্ধা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। হিন্দিতে করে অমিত শাহ বলেছেন, ‘কার্গিল বিজয় দিবস ভারতের কাছে আত্মসম্মান, বীরত্ব ও নেতৃত্বের পরিচয় বহন করে। যারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে কার্গিলের খাড়া পাহাড় থেকে শত্রুদের পরাজিত করেছিলেন, সেইসব জওয়ানদের মাথা নত করে আমি সম্মান জানাই যাঁরা মাতৃভূমির জন্য নিজেদের বলি দেন, তাঁদের জন্য দেশ গর্বিত।’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ট্যুইটে বলেন, ‘যারা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়য়ে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন , যুদ্ধে আহত হওয়ার পরও বিভিন্নভাবে দেশের সেবা করেছে তাদের সম্মান জানাই।’