• facebook
  • twitter
Wednesday, 13 August, 2025

পাঞ্জাবে দপ্তরহীন মন্ত্রী, আপ কাণ্ডে চড়া সুর বিজেপির

পাঞ্জাবে আপ সরকার গঠনের পর প্রথমে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ঢালিওয়াল

ফাইল চিত্র

দিল্লি দখলের পর বিজেপি এবার পাখির চোখ করেছে আম আদমি পার্টি শাসিত পাঞ্জাবকে। আর এর মূল কারণই হল, আপ শাসিত পাঞ্জাবের মন্ত্রীকে ঘিরে বিতর্ক। চরম বিতর্কের মুখে পড়েছেন পাঞ্জাবের মন্ত্রী কুলদীপ সিং ঢালিওয়াল। রাজ্যের মুখ্যসচিবের নোটিসেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ওই মন্ত্রী যে বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বিগত ২০ মাস ধরে তার কোনও অস্তিত্বই নেই। ফলে আম আদমি পার্টির এই কীর্তিকলাপকে কেন্দ্র করে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। ফলে দুর্নীতির অভিযোগে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। 

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের সরকার ২০ মাস পর আবিষ্কার করল যে, তাদেরই এক মন্ত্রী এমন একটি দপ্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত যে দপ্তরের কোনও অস্তিত্বই নেই। শুক্রবার পাঞ্জাব সরকার এক গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে স্বীকার করেছে যে, বর্ষীয়ান আপ নেতা এবং মন্ত্রী কুলদীপ সিং ঢালিওয়ালকে দেওয়া প্রশাসনিক সংস্কার নামে কোনও দপ্তরের অস্তিত্বই নেই। ঢালিওয়াল বর্তমানে কেবলমাত্র রাজ্যের অনাবাসী ভারতীয় দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। যে  বিজ্ঞপ্তি পাঞ্জাব সরকারের তরফে প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে ঢালিওয়ালের মন্ত্রকের রদবদলের নির্দেশ এসেছে খোদ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের তরফ। সেই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে রাজ্যপাল আগের মন্ত্রিপরিষদের রদবদলে সম্মতি দিয়েছেন।

পাঞ্জাবে আপ সরকার গঠনের পর প্রথমে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ঢালিওয়াল। ২০২৩ সালে ক্যাবিনেটে রদবদলের সময় তাঁকে সরিয়ে প্রসাসনিক সংস্কার দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ফের ক্যাবিনেট বদল হয়। তবে ঢালিওয়ালের বিভাগে কোনও পরিবর্তন হয়নি। সম্প্রতি জানা যায় যে, বিগত ২০ মাস ধরে ওই বিভাগে কোনও কর্মী নেই। বিভাগীয় কাজকর্ম নিয়ে কোন বৈঠকও হয়নি। অথচ ২০ মাস ধরে এই বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন মন্ত্রী। সম্প্রতি বিষয়টি আপ সরকারের নজরে আসে এবং তারপরই বিভাগ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করা হয়। 

প্রসঙ্গত, ভগবন্ত মন্ত্রিসভায় ঢালিওয়াল হলেন পঞ্চম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রবীণ মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, অর্থমন্ত্রী হরপাল চিমা, নতুন ও পুনর্নবীকরণ শক্তি মন্ত্রী আমন অরোরা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ও সশক্তিকরণ মন্ত্রী ডঃ বলজিৎ কৌরের পরেই স্থান ঢালিওয়ালের। সম্প্রতি তাঁর নাম সামনে আসে আমেরিকা ফেরত যাত্রীদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে।

অস্তিত্ব নেই এমন দপ্তরকে পাঞ্জাবের আপ মন্ত্রিসভার মন্ত্রী প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময় ধরে কীভাবে চালাতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বলেন, ‘আপনারা ভাবতে পারেন, একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী একটি দপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন, যার সরকারি খাতায় অস্তিত্বই নেই! অরবিন্দ কেজরিওয়াল হলেন একজন প্রতারক, যিনি সাধারণ মানুষের মন থেকে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন।’ 

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভাণ্ডারিও আপ সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘আপ সরকার প্রশাসনকে প্রহসনে পরিণত করেছে। ২০ মাস ধরে এক মন্ত্রী কাজ চালাচ্ছেন, যে দপ্তরের বৈঠক হয়নি, ঠিকানাও নেই! মুখ্যমন্ত্রী এসবের কিছুই জানেন না, তা হয় নাকি!’ 

বিজেপির অভিযোগ, আপ শাসিত পাঞ্জাবে মন্ত্রীর কোনও ভূমিকাই নেই। সবই দিল্লি থেকে রিমোটে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই ২০ মাস ধরে একজন মুখ্যমন্ত্রীর বুঝতে সময় লাগল যে তাঁর মন্ত্রীসভার একটি বিভাগের কোনও অস্তিত্বই নেই, অথচ যার দায়িত্বে রয়েছেন একজন মন্ত্রী।