• facebook
  • twitter
Friday, 19 December, 2025

মিমি চক্রবর্তী ও অঙ্কুশ হাজরার প্রায় কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

বেআইনি বেটিং অ্যাপ মামলা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

বেআইনি অনলাইন বেটিং অ্যাপ সংক্রান্ত অর্থপাচার মামলায় টলিউডের দুই তারকার বিরুদ্ধে বড়সড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রের আর্থিক দুর্নীতি বিষয়ক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ ও অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী এবং টলিউড অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার যুবরাজ সিং, রবিন উথাপ্পা এবং অভিনেতা সোনু সুদেরও এই মামলায় নাম জড়িয়েছে।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের আওতায় ‘প্রভিশনাল অ্যাটাচমেন্ট অর্ডার’ জারি করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, বাজেয়াপ্ত সম্পত্তিগুলি অপরাধলব্ধ আয়ের অংশ। বাজেয়াপ্তের মধ্যে রয়েছে মিমি চক্রবর্তীর প্রায় ৫৯ লক্ষ টাকা এবং অঙ্কুশ হাজরার প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকার সম্পত্তি। একইভাবে যুবরাজ সিংয়ের প্রায় ২.৫ কোটি, সোনু সুদের প্রায় ১ কোটি এবং রবিন উথাপ্পার প্রায় ৮.২৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তিও এই অপরাধের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া নেহা শর্মার প্রায় ১.২৬ কোটি ও মডেল উর্বশী রাউতেলার মায়ের প্রায় ২.০২ কোটি টাকার সম্পত্তি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের নজরে রয়েছে।

Advertisement

এই মামলার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিদেশে নিবন্ধিত ১এক্সবেট। ইডি অনুমান করছে, এই বেআইনি অনলাইন বেটিং চক্রের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সব তারকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর আগেও একই মামলায় শিখর ধাওয়ান ও সুরেশ রায়নার প্রায় ১১.১৪ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ১এক্সবেট একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন বেটিং সংস্থা, যার লাইসেন্স ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ কুরাসাওতে এবং রেজিস্ট্রেশন সাইপ্রাসে। ভারতে ২০২৩ সালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৯এ ধারায় ১এক্সবেটসহ বহু বিদেশি বেটিং অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অনলাইন লিঙ্ক, মিরর সাইট ও টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা অ্যাপে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন।

ইডি তদন্ত করে দেখছে, ভারতে কারা এই অ্যাপের প্রচার চালিয়েছে, বিজ্ঞাপন বা এন্ডোর্সমেন্টের টাকা কীভাবে লেনদেন হয়েছে এবং অর্থ কীভাবে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞাপন সংস্থা, মধ্যস্থতাকারী দল ও শেল কোম্পানিগুলির ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রায় ২২ কোটি মানুষ অনলাইন বেটিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। এর ফলে বেআইনি বেটিং অর্থনীতি বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। সরকারের কাছে এটি শুধু রাজস্ব ক্ষতির বিষয় নয়, প্রতারণা, নেশা ও অর্থপাচারের বড় ঝুঁকি। সরকার ইতিমধ্যেই রিয়েল মানি বেটিং নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, এই অ্যাপগুলি আরও গোপন ও গভীর নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে কি না। ১এক্সবেট মামলা সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটিই সামনে নিয়ে এসেছে।

Advertisement