মুম্বইয়ের বান্দ্রায় হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের ভিড়ে পুলিশের লাঠি

করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র আর সেখানে এই ভিড় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে।

Written by SNS Bandra | April 15, 2020 3:39 pm

মুম্বইয়ের বান্দ্রায় হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিকের ভিড়। (Photo: Twitter / @Love_Kartikey)

করোনা রুখতে ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার যখন তিনি এই ঘোষণা করছেন সেই দিনই ‘সোশ্যাল ডিসটেন্সিং’কে তুড়ি মেরে মুম্বইয়ের বান্দ্রা স্টেশনে হাজির হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। দিনের পর দিন সামান্য খাবার জুটছে না তাদের। পানীয় জলটুকুও পাচ্ছেন না। সে কারণে বাড়ি ফিরতে চান তারা। এই কারণেই স্টেশনে জমায়েত করেন শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ভিড় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

লকডাউনের কারণে চলছে না ট্রেন। কিন্তু খিদের কারণে যেভাবে হাজার হাজার শ্রমিক একজোট হল তা কিন্তু অস্বস্তিতে ফেলছে সরকারকে। গোয়েন্দা রিপোর্ট কেন আগাম এল না পুলিশের কাছে তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে। করোনায় সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র আর সেখানে এই ভিড় করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে বান্দ্রা স্টেশনে পরিযায়ী শ্রমিকদের জড়ো হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও প্রয়োজনে কেন্দ্র মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গেই রয়েছে এই বার্তা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সূত্রের খবর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা চলতে থাকলে তো করোনার বিরুদ্ধে দেশের লড়াই দুর্বল হয়ে পড়বে। অবিলম্বে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সবরকম ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

২৮ মার্চ আনন্দ বিহার বাসস্ট্যান্ডে উপচে পড়েছিল ভিড়। আর্তি ছিল চোখে মুখে বাড়ি ফেরার। সামাজিক দূরত্বকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিল্লির বাসস্ট্যান্ডে ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এভাবে নিজের রাজ্যে ফেরার জন্য শ্রমিকরা যদি ভিড় করেন তাহলে লকডাউনের অর্থ কি? কেন শ্রমিকরা খাবার পাচ্ছেন না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যগুলির সীমানা সিল করে দেওয়ার কথা কেন্দ্র বলেছে। যে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা রয়েছে সেই রাজ্যের সরকারকে শ্রমিকদের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর পরেও যদি শ্রমিকরা একজোট হয়ে বাড়ি ফেরায় উদ্যোগী হয় তাহলে ১৪৪ ধারা জারির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র।

শ্রমিকদের মধ্যে কেউ হয়তো রটিয়ে দিয়েছিল মঙ্গলবার লকডাউন উঠে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী সে রকমই কিছু ঘোষণা করতে পারেন। সে কারণেই বাড়ি ফেরার জন্য একজোট হয়েছিলেন তারা। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা মনে করছে তাদের দুর্দশা আরও বহুগুণ বেড়ে গেল। বাড়ি ফিরতে হবে না হলে হয়তো না খেয়েই মরতে হবে। এমনটাই বলছে পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ।