জনসভার ডাকে মণিপুরের কাংলা ফোর্ট শয়ে শয়ে নিরাপত্তা কর্মীর ঘেরাটোপে

Written by SNS January 24, 2024 6:58 pm

ইম্ফল, ২৪ জানুয়ারি– তিনমাসেল থামেনি মণিপুরে অশান্তির আগুন৷ গত দুই সপ্তাহে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হাতে খুন হয়েছেন চার জন কাঠমিস্ত্রি, দু’জন পুলিশ কমান্ডো এবং এক জন গ্রাম-রক্ষা স্বেচ্ছাসেবক৷ আর এরপরই বৃহস্পতিবার রাজধানী ইম্ফলের কেন্দ্রস্থলে থাকা একদা মণিপুর সাম্রাজ্যের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ঐতিহাসিক কাংলা ফোর্টের ভিতরে জনসভার ডাক দিয়েছে একটি গ্রাম প্রতিরক্ষা গোষ্ঠী৷ এই ডাকে অশান্তির আগুন আরও বাড়তে পারে ভেবেই ২৪ ঘণ্টা আগেই কাংলা ফোর্টের চারপাশ নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেললেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর শয়ে শয়ে জওয়ান৷
জানা গিয়েছে, এদিন জনসভার ডাক দেওয়া ‘আরাম্বাই টেঙ্গোল’ গ্রাম প্রতিরক্ষা গোষ্ঠীর তরফে সমস্ত বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বৃহস্পতিবারের জনসভায়৷ সূত্রের খবর, মণিপুরের জাতি সংঘর্ষ নিয়ে সেখানে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন নেতা-নেত্রীরা৷ এই জনসভার পূর্ব কর্মসূচী হিসেবে কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও বুধবার থেকেই ফোর্টে জমায়েত শুরু করেছেন ‘আরাম্বাই টেঙ্গোল’-এর সদস্যরা৷
সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তিন সদস্যের একটি বিশেষ দল ইম্ফলে এসে ‘আরাম্বাই টেঙ্গোল’-এর সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে৷ মঙ্গলবার ফের বৈঠকে বসে তারা৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উত্তর-পূর্ব বিষয়ক উপদেষ্টা এ কে মিশ্রের নেতৃত্বে দলটি রাজ্যসভার সাংসদ লিশেম্বা সানাজাওবার বাডি়তে বৈঠকে বসেছিল৷
এ সবের মধ্যেই নাগা উপজাতির নেতা-সহ রাজ্যের মোট ৩৫ জন বিধায়ক কেন্দ্রের কাছে বিদ্রোহী ২৫টি কুকি গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘সাসপেনশন অফ অপারেশন’ চুক্তি বাতিল করার দাবি জানিয়েছে৷ দাবি না পূরণ হলে জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ নেবেন প্রচ্ছন্ন হুমকী দিয়ে রেখেছেন তাঁরা৷ তবে এই ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ হুমকি বাস্তব হলে যে রাজ্যের বিজেপি সরকারও পডে় যেতে পারে বলেই আশঙ্কা রাজনীতিক মহলে৷
সোমবার একটি রেজোলিউশনে বিধায়করা জানিয়েছেন, কেন্দ্র, রাজ্য এবং ২৫টি কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে ত্রিপাক্ষিক ‘সাসপেনশন অফ অপারেশন’ চুক্তি বাতিল করা হলে নিরাপত্তা বাহিনী পুরোদমে কুকি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে পারবে৷
‘সাসপেনশন অফ অপারেশন’ চুক্তি অনুযায়ী বিদ্রোহীদের নির্দিষ্ট কিছু ক্যাম্পে রাখা হয়েছে৷ অভিযোগ, ২০২৩ সালের মে মাসে কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে জাতি সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু ক্যাম্পে বিদ্রোহীদের পূর্ণ উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি৷ গত সপ্তাহতেই মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ জানিয়েছিলেন, মায়ানমারের বিদ্রোহীরা সীমান্তবর্তী মোরেহ শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালাতে পারে৷ যদিও এর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ তবে, কুলদীপ নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আক্রমণের ঘটনায় কুকি বিদ্রোহীদের জডি়ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন৷