• facebook
  • twitter
Wednesday, 9 July, 2025

মোদীর আমলে বিরাট স্বাস্থ্য দুর্নীতি

সিবিআই-এর তরফে দায়ের করা এফআইআরে জানানো হয়েছে, সুপরিকল্পিত ভাবে এই অপরাধমূলক যড়যন্ত্রের কাজ চালানো হয়েছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মোদী সরকারের জমানায় বড়সড় দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। মেডিক্যাল কলেজগুলিকে অনুমোদন দেওয়া ও কলেজগুলির মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে কোটি কোটি টাকার খেলা, এক কথায় যাকে বলা যায় ঘুষ। সিবিআই-এর তরফে ৩৪জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি-সহ ধর্মগুরুরাও। উল্লেখযোগ্য হল, এই আর্থিক দুর্নীতির মামলায় নাম জড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন তথা এনএমসি, বহু বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধি, এমনকী ইউজিসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সেস-এর বর্তমান চ্যান্সেলর ডি পি সিং-এরও। তদন্তকারীদের মতে, এই দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে রয়েছে গোটা ভারতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের ধারণা, এটা ভারতের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ মেডিক্যাল কলেজ কেলেঙ্কারির অন্যতম। এই কেলেঙ্কারির নেপথ্যে রাজনৈতিক যোগও রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

সিবিআইয়ের এফআইআরে জানানো হয়েছে, সুপরিকল্পিতভাবে এই অপরাধমূলক যড়যন্ত্রের কাজ চালানো হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজগুলির স্বীকৃতি, পরিদর্শন ও নবীকরণের গোপন তথ্য ফাঁস করা হতো। এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও এনএমসির সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন সরকারি আধিকারিক বেসরকারি কলেজের দালালদের কাছে গোপন সরকারি নথির ছবি তুলে পাঠাতেন, যেখানে একাধিক বিষয়ে তথ্য থাকত। সেই নথিতে থাকত মেডিক্যাল কলেজগুলিতে কোন আধিকারিক পরিদর্শন করবেন, কবে পরিদর্শন করবেন। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কিছুক্ষণের জন্য এক ভাড়া করা ফ্যাকাল্টি, ভুয়ো পেশেন্ট ও ক্লোন করা আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হতো।কলেজগুলিকে সাজিয়ে রাখা হত ভুয়ো ব্যবস্থায়। অভিযোগ, পরিদর্শনে আসা আধিকারিককে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে পছন্দ মতো রিপোর্ট তৈরি করিয়ে নিত কলেজগুলি।এভাবে চলতে থাকে জালিয়াতি।’

সিবিআই সূত্রের খবর, দেশের মধ্যে অনেকদিন ধরে এই দুর্নীতিচক্র কাজ করে আসছিল। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে যে ৩৪জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসার, বেসরকারি কলেজের কর্তাব্যক্তি, মধ্যস্থতাকারী ও মেডিক্যাল রেটিং বোর্ডের সদস্যদের। তাছাড়া ধর্মগুরুরাও এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত। নাম রয়েছে রাওয়াতপুরা সরকার ওরফে রবিশঙ্কর মহারাজেরও। এছাড়াও নাম জড়িয়েছে ইন্দোরের ইনডেক্স মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান সুরেশ সিং ভাদোরিয়া, উদয়পুরের গীতাঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ময়ূর রাওয়াল-সহ একাধিক ব্যক্তির। এবার দেখার বিষয়, তদন্তে আর কাদের নাম উঠে আসে। কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, কীভাবে জড়িত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, এটা ভারতে অন্যতম বৃহত মেডিক্যাল কলেজ কেলেঙ্কারি।