প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের কটাক্ষ করলেন মনমোহন

গালওয়ান ইস্যুতে অবস্থার গুরুত্ব না বুঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কথা বলছেন বলে কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।

Written by SNS New Delhi | June 23, 2020 6:01 pm

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। (File Photo: IANS)

গালওয়ান ইস্যুতে অবস্থার গুরুত্ব না বুঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কথা বলছেন বলে কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। দু’বারের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে কথা না বলার জন্য তাঁকে কম কথা শুনতে হয়নি। সেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীই এদিন ভারত চিন সীমান্ত বিবাদ নিয়ে মুখর হলেন। প্রধানমন্ত্রীর পদ সামলাতে গিয়ে চিন্তাভাবনা না করেই কথা বলার যে বিপদ রয়েছে তা নিজের উত্তরসুরীকে স্মরণ করিয়ে দিলেন মনমোহন সিং।

নিজের কার্যকালে শব্দ খরচ করায় তাঁর কার্পণ্যের জন্য কথা শুনতে হয়েছে বার বার। কিন্তু সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য প্রসঙ্গে সেই মনমোহনই ‘শব্দ খরচের আগে শব্দের গুরুত্ব বুঝে নেওয়া উচিত’ বলে উচ্চকিত হলেন।

গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের পর সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ‘ভারতের কোনও ভূখণ্ড বা কোনও পোস্ট বেদখল হয়নি।’ মোদির এই মন্তব্যের পর বিরোধীরা শাসক দলের কাছে জানতে চান, চিন যদি ভারতীয় ভূখণ্ড বা পোস্ট দখল না-ই করে থাকে, তাহলে সংঘর্ষ কেন হল? উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট যে চিন ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করেছে। তা হলে কি প্রধানমন্ত্রী ধরেই নিচ্ছেন গালওয়ান উপত্যকার ওই বিতর্কিত ভূখণ্ড চিনের?

এই ইস্যুতে এবার বিবৃতি জারি করে নিজের মতামত জানালেন দেশের দু’বারে প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং। তিনি বলেন, আমরা এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছি। এখন সরকারের কাজকর্ম ঠিক করে দেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের কীভাবে দেখবে। দেশকে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের নিজেদের কর্তব্যের গুরুত্ব বোঝা উচিত। আর আমাদের গণতন্ত্রে সেই দায়িত্বভার প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ওপরেই ন্যক্ত। তাই প্রধানমন্ত্রী যে শব্দ ব্যবহার করছেন, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে তার তাৎপর্য কী হতে পারে সব সময় তা মাথায় রাখা উচিত।

অতীতের অভিজ্ঞতা থেকেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জানান, চিন সব সময়েই বেআইনিভাবে ভারতীয় ভূখণ্ড নিজেদের বলে দাবি করে। গালওয়ান উপত্যকা, প্যাংগং লেকের মতো ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়ে বারবার। এই হুমকি ও আগ্রাসনের কাছে আমাদের দেশের সার্বভৌত্বের সমঝোতা করতে পারি না।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবর, সর্বদল বৈঠকে মোদির এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে চিন। বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বর্তমানের প্রতি প্রাক্তনের সাবধানবাণী, আমাদের কোনও বক্তব্য যাতে ওরা নিজেদের অবস্থানের স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে সেটা খেয়াল রাখা জরুরি। সঙ্কটের মোকবিলায় সরকারের সমস্ত শাখা যাতে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়, সেটাও দেখতে হবে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আরও স্মরণ করিয়ে দেন, ভুল তথ্য দেওয়া কূটনীতি নীতি নির্ধারণকারী নেতৃত্বের বিকল্প হতে পারে না।