প্রয়াত প্রখ্যাত নাট্যকার, নির্দেশক ও ‘থিয়েটার অফ রুটস’ আন্দোলনের অন্যতম পথপ্রদর্শক রতন থিয়ম। বুধবার ভোরে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মণিপুরি শিল্পী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। রতন থিয়মের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভারতীয় নাট্যজগতে। তাঁর সৃষ্টি ও শিল্পকর্মে আধুনিকতা আর শিকড়ের সন্ধানের মেলবন্ধন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বারবার। মণিপুরের গণ্ডি ছাড়িয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন গোটা ভারতের এক অনন্য নাট্য-ব্যক্তিত্ব।
রতন থিয়ম তাঁর সৃজনশীল মেধা দিয়ে ভারতীয় নাটককে এক নতুন দিশা দেখিয়েছেন। ‘চক্রব্যূহ’, ‘ঋতুসংহারম’-এর মতো মঞ্চনাটক নির্মাণের মাধ্যমে নাট্যচর্চায় এনেছিলেন অভিনব ভাবনার ছাপ। প্রাচীন নাট্য ঐতিহ্যকে আধুনিক রূপে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা এবং শিল্পবোধ আজও নাট্যচর্চার অনুপ্রেরণা। ১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে। সঙ্গীত নাটক আকাদেমির সহ-সভাপতি এবং পরবর্তী সময়ে জাতীয় নাট্য বিদ্যালয় (ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা)-এর চেয়ারপার্সনের পদেও নিযুক্ত হয়েছিলেন থিয়ম।
Advertisement
রতন থিয়মের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নংথমবাম বীরেন সিং। এক শোকবার্তায় তিনি লেখেন, ‘শ্রী রতন থিয়মের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করছি। ভারতীয় নাট্যজগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন তিনি। মণিপুরের এক অমূল্য সম্পদ। শিল্পের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা, মণিপুরি সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা শুধু ভারতের নয়, বিশ্বের নাট্যশিল্পকে সমৃদ্ধ করেছে।’ রতন থিয়মের অবদান শুধু নাট্যজগতেই সীমাবদ্ধ নয়, তাঁর ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি শিল্প ও সংস্কৃতির জগতে রেখে গিয়েছে অমোচনীয় ছাপ। তাঁর চলে যাওয়া ভারতীয় থিয়েটারের এক যুগের অবসান।
Advertisement
Advertisement



