কলকাতা, ২৯ জুন – বিচারব্যবস্থা যাতে কোনওভাবে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট না হয় , শনিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সামনে এমনই অনুরোধ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমসাময়িক বিচারবিভাগীয় উন্নয়ন নিয়ে আয়োজিত বিশেষ এই সম্মেলনে বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থেকে দূরে রাখার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক সম্মেলনে শনিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় উপস্থিত ছিলেন ৷ তাঁর সামনেই মুখ্যমন্ত্রী এই অনুরোধ করেন৷
কলকাতা হাই কোর্টের বার লাইব্রেরির দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুক্রবার কলকাতায় এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। শনিবার সেই উপলক্ষেই ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির একটি আলোচনাসভায় যোগ দেন তিনি । সেই সভাতে আমন্ত্রণ জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। শনিবার সেখানে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম-সহ অন্যান্যরা।
শনিবারের আলোচনাচক্রে বিচারব্যবস্থাকে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থেকে দূরে রাখার আহ্বান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মমতা এদিন তাঁর বক্তব্য রাখার আগেই বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সবার উদ্দেশ্যে ক্ষমা চেয়ে নেন ৷ জানান, তিনি কাউকে আঘাত করার জন্য এই কথা বলছেন না ৷ মমতা বলেন, “এই সম্মেলনে বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত যাঁরা এসেছেন, তাঁরা আমাদের দেশ, তথা বিশ্বের সম্পদ ৷ তবে, আপনাদের সবার কাছে আমার বিনম্র অনুরোধ, তার আগে আমি আপনাদের সবার কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইছি ৷ আমার কাউকে অপদস্থ বা ছোট করা উদ্দেশ্য নেই ৷ কিন্তু, আমার বিনম্র নিবেদন, দয়া করে দেখবেন যাতে বিচারব্যবস্থায় কোনওরকম রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব না থাকে। বজায় রাখা উচিত গোপনীয়তাও।” মমতার কথায়, “বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে শুদ্ধ, সৎ, পবিত্র হওয়া উচিত ৷ মানুষ যেন সর্বদা বিচারব্যবস্থাকে পুজো করে। ” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমদের ৮৮টি ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্ট রয়েছে, যার মধ্যে ৫৫টি মহিলাদের জন্য। ৯৯টি মানবাধিকার কোর্ট রয়েছে।
মমতা বলেন, ‘‘আমাকেও নিজেদের পরিবারের সদস্য বলে মনে করুন। আমিও আইনের লোক। আমি তিন-চারটি কেস লড়েছি। বিচার ব্যবস্থা আমাদের কাছে পবিত্র, মন্দির-মসজিদ-গির্জা-গুরুদ্বারে
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক মামলার রায়ের ক্ষেত্রে বিচারপতিদের একাংশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ করেছিলেন মমতা ৷ বিশেষ করে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হওয়ার পর, মমতা বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাবের তত্ত্বকে আরও জোরালো করে তোলেন ৷ যদিও, এদিনের সম্মেলনে তিনি কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য বা কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেননি ৷ তবে, অতীতে বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তিনি করেছিলেন ৷