• facebook
  • twitter
Saturday, 17 May, 2025

কাশ্মীরের বুকিং বাতিল করে হিমাচলে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের ফোন

ক্ষতির মুখে কলকাতার পর্যটন ব্যবসা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মঙ্গলবার পহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর আতঙ্কে বাংলার পর্যটকরা। এই ঘটনার পূর্বে যাঁরা কাশ্মীরে যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করেছিলেন এবং সেইমতো ভ্রমণ সংস্থাগুলিতে বুকিং করেছিলেন, তাঁরা আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। অধিকাংশ পর্যটক পরিকল্পনা পাল্টে হিমাচল বা অন্য কোথাও যেতে চাইছেন। সেইমতো এজেন্সিগুলিতে অনর্গল ফোন করছেন তাঁরা। তাঁদের অনুরোধ, কাশ্মীরের বুকিং বাতিল করে হিমাচলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন। যার ফলে ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়তে চলেছে পর্যটন শিল্পে।

বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থাগুলি সূত্রে জানা যাচ্ছে, পর্যটকদের কেউ ফোন করে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিচ্ছেন, কেউ সরাসরি ভ্রমণের পরিকল্পনাই বাতিল করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ কাশ্মীরের বুকিং পরিবর্তন করে হিমাচল প্রদেশে ভ্রমণের জন্য অনুরোধ করছেন। যার জেরে যথেষ্ট চিন্তায় পড়েছে ভ্রমণসংস্থাগুলি। তাদের আশঙ্কা, সারা বছর ধরে কাশ্মীর থেকে তাঁদের যে পরিমাণ ব্যবসা হত, তাতে এবার মন্দা দেখা দেবে। ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্প। আর এই বিপর্যয়ের বিশেষ প্রভাব পড়তে চলেছে কলকাতার ভ্রমণ সংস্থাগুলির ওপর।

কলকাতার প্রথম সারির একটি ভ্রমণ সংস্থা দৈনিক স্টেটসম্যানকে জানিয়েছে, পহেলগামে সম্প্রতি জঙ্গি হামলার কারণে অনেক পর্যটক ভয়ে কাশ্মীর ভ্রমণে যেতে চাইছেন না। তবে এই ঘটনার মধ্যেও তাঁদের আরও একটি পর্যটক দল শ্রীনগরে অবস্থান করছে। সেই টিমের সকলেই সেনা নিরাপত্তার মধ্যে আছেন। তাঁদের কোনও সমস্যা হয়নি।

ওই ভ্রমণ সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার তাঁদের প্রায় ৪০ জনের একটি ভ্রমণকারী দল কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে। তাঁদের অনেকের টাকা ফেরানোও শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়া আগামী ১ মে এবং ৮ মে আরও দুটি দল কাশ্মীরে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও সেটা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

শহরের অন্য একটি ভ্রমণ সংস্থা জানিয়েছে, পহেলগামে জঙ্গি হামলার জেরে মানুষের মধ্যে ভয় ঢুকে গিয়েছে। সকলে এখন আতঙ্কিত। কাশ্মীরে ট্যুর করা তাই এখন একটু সমস্যার। যা ঘটেছে, তা খুব খারাপ। এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এর ফলে আমাদের পর্যটন শিল্পের বাজার ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার ঘটনার সময়ে তাঁদের ৩৮ জন পর্যটক পহেলগাঁওয়ে ছিলেন। দুপুরে মধ্যাহ্নভোজনের সময় হওয়ায় তাঁরা মূলত হোটেলের ভিতরে ছিলেন। আজ তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন। তবে জম্মুর রাস্তা এখন বন্ধ।

এই সংস্থার এক কর্তা বলেন, মে মাসে কাশ্মীরের অনেক বুকিং আছে। ইতিমধ্যে বিমানসংস্থা ঘোষণা করেছে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বুকিং বাতিলের জন্য বাড়তি কোনও টাকা লাগবে না। ফলে অনেকেই কাশ্মীরে না যাওয়ার চেষ্টা করবেন। আর কিছু দিনের মধ্যেই বুকিং বাতিলের ফোন আসতে শুরু করবে। নিশ্চিতভাবেই অনেকে কাশ্মীরের ভ্রমণ এখন বাতিল করবেন। অনেকে আবার শিমলা, কুলু-মানালির দিকে যেতে চাইছেন। যাঁরা একা যাচ্ছেন, তাঁরা এখন সাহস পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে তেমন দু’টি পরিবারের ফোন এসেছে।