কৈলাস মানসরোবর যাত্রা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। পাঁচ বছরের পর, বেজিংয়ে বিশেষ প্রতিনিধিদের ২৩-তম বৈঠকে ৬টি বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। পূর্ব লাদাখে চার বছরের দীর্ঘ অচলাবস্থার পরে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে ভারত এবং চিন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। চিনের পক্ষ থেকে ছিলেন বিদেশ মন্ত্রী ওয়াং ই। উভয় দেশের প্রতিনিধি সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখাকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। আন্তঃসীমান্ত নদী ও বাণিজ্য সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানসহ অনেক বিষয়ে একমত তাঁরা।
Advertisement
এর আগে বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জি-২০ সম্মেলনের সময় ওয়াং ইয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময় মানসসরোবর যাত্রা পুনরায় চালু করা এবং ভারত ও চিনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। গত ৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে কৈলাস মানসরোবর যাত্রা।
Advertisement
কৈলাস মানসরোবরের যাত্রা শুরু হয় লিপুলেখ পাস দিয়ে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ফুট উপরে। এই যাত্রা শুরু হত জুন মাসে। এর প্রস্তুতি অবশ্য শুরু হয়ে যেত জানুয়ারি থেকেই। কৈলাস মানসরোবর যাত্রা একটি পবিত্র বিষয়, যা হিন্দু ধর্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই যাত্রাটি তিব্বতের কৈলাস পর্বত এবং হ্রদ মানসরোবর ভ্রমণকে বোঝায়, যে দুটিকেই পবিত্র স্থান বলে মনে করা হয়।
কৈলাস পর্বতকে ভগবান শিবের আবাস বলে মনে করা হয়, অন্যদিকে মানসরোবর হ্রদকে ভগবান ব্রহ্মার সৃষ্টি বলে মনে করা হয়। এই হ্রদটি তিব্বতের উচ্চ মালভূমিতে অবস্থিত এবং এর উচ্চতা প্রায় ৪৫৯০ মিটার। কৈলাস মানসরোবর যাত্রার সময়, তীর্থযাত্রীরা কৈলাস পর্বত প্রদক্ষিণ করেন এবং মানসরোবর হ্রদে স্নান করেন। এই যাত্রা খুবই কঠিন এবং তীর্থযাত্রীদের এর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হয়।
কৈলাস মানসরোবর তিব্বতের উচ্চ মালভূমিতে অবস্থিত, যা হিমালয় পর্বতমালার একটি অংশ। এটি চিনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে পড়ে, যা ভারতের উত্তর সীমান্তের কাছে অবস্থিত। কৈলাস পর্বত তিব্বতের পশ্চিম অংশে অবস্থিত, যার উচ্চতা প্রায় ৬৬৩৮ মিটার। মানসরোবর হ্রদ কৈলাস পর্বত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
Advertisement



