ভারতে গত কয়েক দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। গত চারদিনে এই সংখ্যাটা বেড়েছে ২৬,৪৮৬। আর এই রেকর্ড বৃদ্ধিতেই বিশ্বের প্রথম ১০ করোনা আক্রান্তের তালিকায় ঢুকে পড়েছে ভারত। কিন্তু আগামী কয়েক দিন এই আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। জুন মাসে ভারতে সংক্রমণের সবথেকে খারাপ সময় আসতে চলেছে বলেও আশঙ্কা করছে তারা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিন অনুযায়ী, গত চার দিনে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে দেশে। শুক্রবার আক্রান্ত বেড়েছিল ৬,০৮৮। শনিবার তা হয় ৬,৬৫৪। রবিবার করোনা আক্রান্ত বাড়ে ৬,৭৬৭। আর সোমবার এই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৬,৯৭৭। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ২৬,৪৮৬। আর তার জেরে এখনও পর্যন্ত ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১,৩১,৮৪৫।
Advertisement
আগামী কয়েক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার অন্যতম বড় কারণ হিসেবে লকডাউনে ছাড় দেওয়ার কথা বলছে বিশেষজ্ঞরা। তারা জানিয়েছেন, গত দু’মাস ধরে কড়া লকডাউন চলছিল দেশে। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই লকডাউনে একাধিক ছাড় দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু পরিষেবা শুরু হয়েছে। তারই প্রভাব পড়তে পারে দেশে। বাড়তে পারে আক্রান্তের সংখ্যা।
Advertisement
এই যুক্তির পক্ষে বেশ কিছু দেশের উদাহরণ দিচ্ছেন তাঁরা। যেমন এপ্রিল মাসে ইরানে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তখন প্রতিদিন হাজারেরও কম আক্রান্ত দেখা যেত। কিন্তু লকডাউন তুলতেই মে মাসে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় দ্বিগুণ হারে এক মাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে সেখানে।
একই রকম ভাবে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ এবং চিন, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলিতেও লকডাউন শিথিল করার পরে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। সেই দৃশ্যই দেখা যেতে পারে ভারতে।
কেয়ার নামের এক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এপিডেমিওলজিস্ট তন্ময় মহাপাত্র জানিয়েছেন, আপনি কখনও ভারতের মতো একটা বড় দেশে খুব বেশিদিন লকডাউন চালাতে পারবেন না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কাজ শুরু করতে হবে। তার মানে এই নয়, সাধারণ মানুষও এই রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাতায়াত শুরু করে দেবে। কন্টেইনমেন্ট জোনগুলিতে এখনও দৈনিক পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন। তার সঙ্গে র্যান্ডম টেস্ট করা দরকা।
জুন মাসে ভারতে সংক্রমণের সবথেকে খারাপ সময় আসতে চলেছে বলে সতর্ক করেছেন তন্ময় মহাপাত্র। তিনি বলেন, এই লকডাউনে ছাড় দেওয়ার প্রভাব দেখা যাবে জুন মাসে। এখনও সবথেকে খারাপ সময় আসেনি। আমাদের পর্যবেক্ষণ বলছে, এপ্রিল, মে মাসের থেকেও খারাপ হবে জুন মাস। জুলাই মাসে হয়তো সংক্রমণের সর্বোচ্চ স্তর বা পিক দেখা যেতে পারে।
Advertisement



