ঝাড়খন্ডের শিক্ষামন্ত্রী ৫৩ বছর বয়সে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেন

শিক্ষা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলেন ঝাড়খন্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাত।

Written by SNS Jharkhand | August 12, 2020 12:44 pm

ঝাড়খন্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাত।Photo: Twitter | @Jagarnathji_mla

তাঁর কলমেই কোথায় নতুন স্কুল কলেজ হবে, পঠন-পাঠন কিভাবে হবে, মেধার উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে সরকারি সিদ্ধান্ত কি হবে, সব কিছুরই সিলমোহর পড়ে তাঁর স্বাক্ষরে। অথচ সেই তিনি কিনা নিজেই দশম শ্রেণি পাশ। বিরোধীদের এমন কটাক্ষ তাঁকে ব্যথিত করত। সেই বঙ্গবিদ্রপ থেকে শিক্ষা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলেন ঝাড়খন্ডের শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহাত।

সোমবার একাদশ শ্রেণিতে তিনি ভর্তি হয়েছেন বোকারোর একটি স্কুলে। শুধু নাম লিখিয়েই তিনি ক্ষান্ত থাকেননি। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি স্কুলে গিয়েই পড়াশোনা করলে। এক্ষেত্রে মন্ত্রীর বার্তা শেখার কোনও বয়স হয় না। ঝাড়খন্ডের ডুমরি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কৃষক পরিবারের ছেলে জগন্নাথ মাহাত নির্বাচিত হন। জগন্নাথকে শিক্ষামন্ত্রী করেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯-এর শেষের দিকে বিজেপি’কে হারিয়ে ঝাড়খন্ডের ক্ষমতায় ফেরে শিবু সোরেনের দল। শিবু সোরেনের ছেলে হেমন্ত সোরেন হন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী। জগন্নাথ মাধ্যমিক পাশ। তিনি শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর বিরোধীরা লাগাতার আত্ৰমণ করেন। বিভিন্ন শিক্ষা সংক্রান্ত ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রীকে কটাক্ষ করতে ছাড়ে না বিরোধীরা।

প্রথম প্রথম বিষয়টিকে খুব একটা আমল না দিলেও কিন্তু ভিতরে ভিতরে যে শিক্ষামন্ত্রী ক্ষুব্ধ তার আঁচ পাওয়াই যাচ্ছিল। এবার বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে মাধ্যমিক পাশ করার ২৫ বছর পর ফের পড়াশোনা করতে ভর্তি হলেন বোকারোর নাবাডিতে দেবী মাহাত স্মারক ইন্টার কলেজে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে তিনি মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন। কলা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তবে প্রতিজ্ঞা করেছেন, পড়াশোনা শেষ করে তিনি শংসাপত্র অর্জন করবেনই। জনসেবাও চলবে, চাষবাসও চলবে, পড়াশোনাও চলবে। পড়াশোনার কোনও বয়স হয় না। এভাবেই আমি সাধারণ মানুষকে অনুপ্রেরণা দিতে চাই। এমনটাই বলছেন ঝাড়খন্ডের শিক্ষামন্ত্রী।

তবে কেন এই সিদ্ধান্ত? এবার আর মন্ত্রী আসল কথাটা চেপে রাখতে পারেননি। তিনি সাফ জানান, শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরের দিন থেকে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তিনি অনেক সমালোচনা সহ্য করেছেন। এই সমালোচনাই তাঁকে নতুন করে শিক্ষার সুযোগ করে দিল। এই সমালোচনাকে প্রেরণা মনে করে তিনি তাঁর পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন।

একজন দশম শ্রেণি পাশ শিক্ষামন্ত্রী রাজ্যের শিক্ষার জন্য কি উদ্যোগ নিতে পারেন? যাঁরা এধরনের মন্তব্য করে আমাকে এবং আমাদের সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছিলেন, আগামী দিনে তাদের যোগ্য জবাব দিতে পড়াশোনাটাকেই প্রাধান্য দিলাম।