মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের শীতলতার মধ্যেও সে দেশ থেকে জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র কেনার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে চলেছে মোদী সরকার। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেই রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে বহু সময় পর্যুদস্ত করেছে ইউক্রেনের সেনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমের দাবি, আমেরিকা থেকে অন্যান্য অস্ত্র আমদানির পাশাপাশি এই জ্যাভেলিন চুক্তিটিও অন্যতম। খবরে প্রকাশ, অনুমোদন পাওয়ার পর এই জরুরি ক্রয় প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতীয় সেনা ১২টি লঞ্চার এবং এবং ১০৪টি ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চলেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ঢেলে সাজাতে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। রাশিয়া-ইউত্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত জ্যাভেলিন যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত ফলপ্রসূ হওয়ায় এর প্রতি আগ্রহী হয় ভারতীয় সেনা।‘এফজিএম-১৪৮ অ্যান্টি ট্যাঙ্ক জ্যাভলিন মিসাইল’-এর সাহায্যেই জেলেনস্কির সেনা রাশিয়ার টি-৭২, টি-৯০ ট্যাঙ্ক উড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। এই জ্যাভেলিনের জন্যই রাশিয়ার আর্মার্ড ডিভিশনগুলি দ্রুত অগ্রসর হতে পারেনি।
Advertisement
ট্যাঙ্ক ধ্বংস করতে সক্ষম এই জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব হল, অল্প প্রশিক্ষণেই একজন সৈনিক এটি ব্যবহার করতে সক্ষম হন। এই ক্ষেপণাস্ত্রের লঞ্চার থেকে নিখুঁত লক্ষ্যে জ্যাভেলিন ছোড়া যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ২৩ কেজির মতো। সাড়ে ৮ কেজির বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র। লঞ্চারের ওজন ৬.৪ কেজি। ২ হাজার ৫০০ মিটার পাল্লার এই মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধীর গতিতে ওড়া হেলিকপ্টারও ধ্বংস করতে সক্ষম।
Advertisement
দেশের ডিরেক্টর জেনারেল (ইনফ্যান্ট্রি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল অজয় কুমার এবং সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, সেনাবাহিনী বিভিন্ন ধরনের অ্যাটাকিং ক্ষেপণাস্ত্রের দিকে নজর দিচ্ছে, যার মধ্যে এমপি বা ম্যান পোর্টেবল সিস্টেম এবং চতুর্থ প্রজন্মের অ্যাটাকিং ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল অজয় কুমার বলেন, ৪.২৫ লাখ কারবিন দেশীয়ভাবে কেনা হচ্ছে। এছাড়াও জরুরি ক্রয়ের তালিকার মধ্যে রয়েছে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, উন্নত মানের হেলমেট, নট সাইট, অ্যাটাক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন, যা নজরদারির জন্য এবং অস্ত্র সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত হবে।
‘জ্যাভলিন’-এর জন্ম ১৯৮৯ সালে। এর নকশা তৈরিতে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রতিরক্ষা সংস্থা যুক্ত ছিল। সেগুলি হল, টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টস, মার্কিন ম্যারিয়েটা (বর্তমান রেথিয়ন টেকনোলজিস) এবং লকহিড মার্টিন। তবে এর উৎপাদনের দায়িত্ব পায় শেষের দু’টি সংস্থা। একটি মার্কিন জ্যাভেলিনের দাম প্রায় ২ লক্ষ ডলার।
মোদী-ট্রাম্প আলোচনার সময়ে জ্যাভেলিন, স্ট্রাইকার আর্মড ভেহিকেল ও পি-৮১ সমুদ্র অন্বেষণে সক্ষম বিমান নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এবার এই ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে মোদী সরকার।
Advertisement



