রক্তচাপ বাড়াচ্ছে কলকাতা, অন্য শহরে সংক্রমণ কমেছে

দেশের তিন শহর দিল্লি-মুম্বই-আহমেদাবাদে সংক্রমণ কমছে। কিন্তু কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

Written by SNS New Delhi | July 25, 2020 6:06 pm

প্রতীকী ছবি (File Photo: IANS)

দেশের তিন শহর দিল্লি-মুম্বই-আহমেদাবাদে সংক্রমণ কমছে। কিন্তু কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। দিল্লি এইমস-এর ডিরেক্টর সেই সঙ্গে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত ‘ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স অন কোভিড ১৯’-এর অন্যতম শীর্ষ সদস্য ডা. রণদীপ গুলেরিয়া এমন দাবি করলেন।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন তিনি, দক্ষিণের কয়েকটি শহর ছাড়াও দেশের তিন মেগাসিটিতে করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী। সেই সঙ্গে করোনার টিকা কবে আসবে, করোনা রুখতে লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা কতটা? এর পাশাপাশি সংক্রমণ শিখরে কখনও পৌঁছবে ভারতে, এই নিয়ে মন্তব্য করার সময় এই দাবি করেন রণদীপ গুলেরিয়া।

দেশে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে মহারাষ্ট্রে। মুম্বই শহর ও শহরতলীতে এর যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি দেশের মধ্যে এই রাজ্যে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত ৩,৪৭,৫০২। এর পরে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছিল দিল্লিতে। আক্রান্তের সংখ্যা রাজধানীতে ১,২৭,৩৬৪। যদিও এখন দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে তামিলনাড়ু। গুজরাতের আহমেদাবাদেও করোনা সংক্রমণ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ ছিল।

এদিন রণদীপ গুলেরিয়া দাবি করেছেন, এই তিন শহরে বর্তমানে সংক্রমণ বৃদ্ধির যে গ্রাফ তা ক্রমশ নামছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য বা শহরে সংক্রমণ শীর্ষে পৌছবে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। দিল্লিতে সংক্রমণের হার কমছে। ঠিক একইভাবে আহমেদাবাদ এবং দক্ষিণের কিছু শহরে সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী। মনে হচ্ছে এইসব শহরে সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিল, এবার নামতে শুরু করেছে। যদিও অন্যত্র সংক্রমণ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিহার ও অসমের কথা বলেছেন তিনি। তবে, সংক্রমণ কমছে মানেই ঢিলেঢালা মনোভাব নেওয়া হবে, এমনটা নয়। বরং আরও সতর্ক হতে হবে। পরিসংখ্যান বলছে, আহমেদাবাদ, মুম্বাই, দিল্লিতে সংক্রমণ নিম্নমুখী। জুন মাসের শেষের দিকে যেখানে প্রতিদিন ২০০০ করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছিলেন, এখন সেখানে সংখ্যাটা হাজারের আশেপাশে রয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০ জুলাই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩০৫। ২১ জুলাই তা কমে হয় ৯৪৫। ২২ জুলাই ১৩১০ এবং ২৩ জুলাই আক্রান্তের সংখ্যা ১২৪৫। যদিও মুম্বইয়ের চেয়ে সংখ্যা ১২৪৫। যদিও মুম্বইয়ের চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে দিল্লি। জুন মাসে রাজধানীতে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছিল ৪ হাজার করে। এখন সেই সংখ্যা কমে হাজারের কাছাকাছি রয়েছে। ৯৫৪ ছিল ২০ জুলাই, ১৩৪৯ ছিল ২১ জুলাই, ১২২৭ ছিল ২২ জুলাই ১০৪১ ছিল ২৩ জুলাই।

ফলে আহমেদাবাদের পরিসংখ্যান যথেষ্টই ইতিবাচক। গুজরাতেও এখন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা। ২০০-এর কাছাকাছি। ২০ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১৯৩, ১৯৯, ১৯৬, ২১০। জুনের শেষের দিকে যেখানে প্রতিদিনই সংখ্যাটা ছিল চারশোর কাছাকাছি।

কলকাতার সঙ্গে এই তিন শহরের তুলনামূলক পার্থক্যে দেখা যাচ্ছে কলকাতায়। আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। জুন মাসের শেষের দিকে যেখানে নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধির সংখ্যা ছিল দুশোর আশেপাশে। সেখানে এখন প্রতিদিনই ৫০০ থেকে ৭০০-এর মধ্যে। ২৩ জুলাই পর্যন্ত ছিল ৬৫১, পরে তা বেড়ে হয় ৬৯২ এবং তারপর হয় ৭৯৫।

ফলে কলকাতার রক্তচাপ বা উদ্বেগ যে বাড়ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেকারণেই সপ্তাহে দু’দিন করে সম্পূর্ণ লকডাউনের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। তবে দেশ সংক্রমণের শিখরে কবে পৌছবে তা অবশ্য নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি রণদীপ গুলেরিয়া। লকডাউন, কঠোর নজরদারি এইসবই হচ্ছে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মূল অস্ত্র, তা এদিনও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন এই চিকিৎসক।