মুম্বইয়ের বস্তি এলাকায় ৫৭ শতাংশ মানুষ সংক্রমিত হয়েছিলেন

ভারতে সবথেকে বেশি সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে মহারাষ্ট্রে। এই রাজ্যের মধ্যে আবার সবথেকে বেশি আক্রান্ত মুম্বইয়ে।

Written by SNS Mumbai | July 30, 2020 1:02 pm

চলছে র‍্যাপিড টেস্ট (Photo by Punit PARANJPE / AFP)

ভারতে সবথেকে বেশি সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে মহারাষ্ট্রে। এই রাজ্যের মধ্যে আবার সবথেকে বেশি আক্রান্ত মুম্বইয়ে। বাণিজ্য নগরীতে সংক্রমণের ছবিটা ঠিক কী, তা জানার জন্য করা হয়েছিল সেরো সার্ভে। আর তাতে দেখা গিয়েছে, বস্তি এলাকায় অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়।

মুম্বইয়ে বসবাসকারী সাত হাজার মানুষের মধ্যে করা হয়েছে এই সমীক্ষা। তাতে দেখা গিয়েছে শহর এলাকায় বসবাসকারী প্রতি দু’জনের একজন অর্থাৎ ১৬ শতাংশ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অন্যদিকে বস্তি এলাকায় বসবাসকারী ৫৭ শতাংশ মানুষ এই ভাইরাসের কবলে পড়েছিলেন। ঘিঞ্জি এলাকায় থাকা, একই শৌচাগার অনেকে মিলে ব্যবহার করার জন্যই তাদের মধ্যেই এই ভাইরাস এত দ্রুত ছড়িয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সাধারণ সেরো সমীক্ষায় (সার্ভে) মানুষের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয় সেখানে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা। আর অ্যান্টিবডি তখনই তৈরি হবে যখন কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠবেন। এই পরীক্ষা থেকে অবশ্য বোঝা যায় না সাধারণ মানুষের মধ্যে কী পরিমাণ সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তবে এই পরীক্ষা থেকে এটা বোঝা যায় যে কোনও জায়গায় মানুষের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে কিনা।

মুম্বইয়ে এক লক্ষের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত। এই সংখ্যা দেশের অন্যান্য শহরে নিরিখে প্রায় সাত শতাংশ। সেই সঙ্গে এখানে মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষের। মুম্বইয়ে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় এক কোটি কুড়ি লক্ষ। তার মধ্যে ৬৫ শতাংশ মানুষ বস্তি এলাকায় বসবাস করেন। এছাড়া মুম্বই শহরের আশপাশে আরও প্রায় ৬০ লাখ মানুষে বসবাস করেন। আর সে কারণেই এই শহরে সেরো সমীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা ছিল।

নীতি আয়োগ, বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন ও টাটা ইনস্টিট্ট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ একসঙ্গে মিলে এই সমীক্ষা চালায়। মুম্বইয়ের তিনটি ওয়ার্ড থেকে রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। তাতে দেখা যায় অনেকের মধ্যেই এই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ তারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি বেশি তৈরি হয়েছে বলেও এই সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। এই সমীক্ষায় আরও জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ আক্রান্তই উপসর্গহীন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যুহার ০.০৫ শতাংশ থেকে ০,১০ শতাংশ।

মঙ্গলবার মুম্বইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১৭ জন। দু’মাস পর এই শহরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রথমবার এতটা কমেছে। এই মুহূর্তে বাণিজ্যনগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ১০ হাজার ৮৪৬। মঙ্গলবার আরও গুপ্ত জনের মৃত্যুও হয়েছে। গত সপ্তাহে রাজধানী দিল্লিতেও সেরো সমীক্ষা করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে এই শহরের ২৩.৪৮ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশেরই শরীরে কোনও উপসর্গ ছিল না।